- Get link
- X
- Other Apps
Posted by
Tiki liki
on
- Get link
- X
- Other Apps
![]() |
| গঙ্গা বক্ষ থেকে কলকাতা হাইকোর্টের দৃশ্য |
আজকাল খবরের কাগজ কিংবা টেলিভিশনে বারবার দেখতে পাওয়া যায় কলকাতা হাইকোর্টে কে। কলকাতার এই প্রাসাদসম বিল্ডিংটি তে বন্দিদের বিচার করা হয়। দুর থেকে দেখলে মনে হয় যেন একটি ইউরোপের কোনো চার্চ বা ক্যাথিড্রাল। কলকাতা হাইকোর্টে ও এসপ্ল্যান্ডের পশ্চিম রো তে পরে। বলাই বাহুল্য যে এসপ্ল্যান্ড রো কে ঘিরে কত সব গুরুত্বপূর্ণ বিল্ডিং রয়েছে। আমাদের ভারতবর্ষে সবকটি আদালতের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন আদালত হলো কলকাতা হাইকোর্ট । যখন কলকাতা, ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী ছিল তখন কলকাতা হাইকোর্ট এখনকার সুপ্রিম কোর্টের ভুমিকা পালন করতো। স্যার এলিজা ইম্পে 1773 সালে সুপ্রিম কোর্টের চিফ জাস্টিস হয়ে কলকাতার চাঁদপাল ঘাট নামেন। অনেক লোক সেদিন ঐ ঘাটে সাহেব কে দেখতে এসেছিল, শোনা যায় সাহেব নাকি সেদিন বলেছিলেন দেখ আমরা ঠিক সময় এদেশে এসেছি, দেখছো এদের পা জুতোর পর্যন্ত নেই। আমি কথা দিচ্ছি ছয় মাসের মধ্যে এই দেশের দুর্দসা ঘুচিয়ে দেবে। এই ইম্পে সাহেব আবার হেস্টিংসের চাটুকার ছিলেন।
![]() |
| স্যার এলিজা ইম্পে |
ইম্পে সাহেব আর হেস্টিংস চক্রান্ত করে নন্দকুমার ফাঁসি দিয়েছিল। কলকাতার যে স্থানে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল বর্তমানে এই যায়গা ফ্যান্সি লেন পরিচিত। ফ্যান্সি নামকরণের একটা কারন আছে, আসলে ব্রিটিশরা ফাঁসি কথাটি উচ্চারণ করতে পারতো না তাই ফাঁসি তারা ফ্যান্সি বলতো। কলকাতা হাইকোর্টের কিন্তু আগে অন্য নাম ছিল, কলকাতা হাইকোর্টে আগের নামছিল হাইকোর্ট অফ জুডিকেচার অ্যাট ফোর্ট উইলিয়াম নামে পরিচিত ছিল। জানা যায় কলকাতা হাইকোর্টের ভিত্তি স্থাপন করা হয় 1864 সালের মার্চ মাসে। ব্রিটিশ আমলে 1861 সালের হাইকোর্ট আইন অনুযায়ী ফোর্ট উইলিয়ামে কলকাতা উচ্চ আদালত তৈরি হয় জুলাই মাসের 1 তারিখে 1862 সালে।
কলকাতা হাইকোর্টকে আগেই বলেছি ইউরোপের কোনো চার্চ বা ক্যাথিড্রাল মতো দেখতে, আসলে কলকাতা হাইকোর্টে গোথিক স্থাপত্য শিল্প রীতিতে তৈরী। কলকাতা হাইকোর্টে ডিজাইন করেছিলেন ব্রিটিশ গর্ভামেন্ট আর্কিটেক ওয়ালথার এল বি গ্রানভিলে ( Walter L. B. Granville ). গ্রানভিলে সাহেব কিন্তু শুধু মাত্র কলকাতা হাইকোর্টে ডিজাইন করেনি। বর্তমানের জিপিও বিল্ডিং যেখান পুরনো ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ ছিল , কলকাতা ইউনিভারসিটির সেনেট হল এবং এখনকার ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম যার আগের নামছিল দ্য ইম্পেরিয়াল মিউজিয়াম। কলকাতা হাইকোর্টের বিল্ডিং টি তৈরি হতে সময় লেগেছিল আট বছর। 1872 সালের জুলাই মাসের এক তারিখে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি স্যার বার্নেস পিকক কলকাতা হাইকোর্টের দায়িত্বভার গ্রহন করে। কলকাতা হাইকোর্টের বিল্ডিংটি বেলজিয়ামের ইপ্রে শহরে ক্লোথ হল নামে একটি বিল্ডিং রয়েছে, সেই বিল্ডিং টি প্রার্থনালয়।
![]() |
| প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ধ্বংসপ্রাপ্ত ক্লোথ হল |
ঐ বিল্ডিংটির আদলে তৈরি হয়েছে কলকাতার হাইকোর্ট। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির আক্রমনের শিকার হয় এই ক্লোথ হল কিন্তু ঐ প্রার্থনালয়টিক তো ঠিক করা প্রয়োজন, ধারণা করা যেতেই পারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর কলকাতা হাইকোর্টের কাছে ইপ্রে শহরের মেয়র হাইকোর্টের প্ল্যান চেয়েছিলেন, কারণ আগেই বলেছি ক্লোথ হলের আদলে তৈরি হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্ট প্ল্যান পাঠিয়েছিল ক্লোথ হলের কতৃপক্ষের কাছে যার ফলে আবার পুনর্গঠন করা হয় ক্লোথ হল। তবে জেন মরিস তার বই Stones of Empire: The Buildings of the Raj উল্লেখ করেছেন the adaptation was loose, and the tower was all wrong, but at least the Calcutta building possessed the same sense of mass and rootedness, and stood with a similar grim importance overlooking the maidan [the huge stretch of open parkland in which the Victoria Memorial Hall and many other important cultural facilities stand]" আরো বলা হয় যে কলকাতা হাইকোর্টের ডিজাইনটি জর্জ গিলর্বাট স্কটের ডিজাইন দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল।
![]() |
| কলকাতা হাইকোর্টের সুদৃশ্য পিলার |
কলকাতা হাইকোর্টের সামনের দিকের পিলার গুলি অত্যন্ত চমকপ্রদ। হাইকোর্টের সামনের দিকের পিলার গুলিতে ক্যানস্টোন দিয়ে বিভিন্ন দৃশ্য খোদাই করা হয়েছে। ঐ দৃশ্য গুলির গুরুত্বপূর্ণ মানেও রয়েছে, জানা যায় ঐ দৃশ্যগুলি বাইবেলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক বর্ননা করেছে যেমন সত্য , দানশীলতা, দাতব্য, বিচার এবং অন্যান্য দিক। এছাড়া বাইবেলে বর্ণিত গাছপালা কে ক্যানস্টোনে খোদাই করা হয়েছে।
জানা যায় কলকাতা হাইকোর্টের এক নম্বর রুমে ইম্পে সাহেবের একটি ছবি আছে, এই ছবিটি এঁকেছেন জোহান জুফানি ( Johan Zoffany ). ভারতের স্বাধীনতা পর কলকাতা হাইকোর্টের সামনে বসানো হয় স্বাধীনতা সংগ্রামী মাস্টার দা সূর্য সেন এর মূর্তি স্থাপন করা হয়। Thacker's Guide to Calcutta বই থেকে জানা যায় কলকাতা হাইকোর্টে সামনে এক সময় ভাইসর টমাস জর্জ বেরিং এবং লর্ড অকল্যান্ডের মূর্তি ছিল।
![]() |
| কলকাতা হাইকোর্টের সামনে টমাস জর্জ বেরিং মূর্তি |
![]() |
| লর্ড অকল্যান্ডের মূর্তি কলকাতা হাইকোর্টের সামনে |
কলকাতা হাইকোর্টে স্যার এডওয়ার্ড হাইড ইস্টের মূর্তি রয়েছে, ইনি একসময়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন।
![]() |
| স্যার এডওয়ার্ড হাইড ইস্টের মূর্তি |
এই বইটি তে অরো বলা হয়েছে যে কলকাতা হাইকোর্ট কে সবচেয়ে সুন্দর দেখায় নদী থেকে, নিশ্চয়ই গঙ্গা নদীর কথাই বলেছে। কলকাতা হাইকোর্টে প্রথম দিকে শুধুমাত্র ইউরোপিয়ানরা বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ হতেন কিন্তু পরবর্তীতে ভারতীয়রা বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ হয়েছিলেন। কলকাতা হাইকোর্টের প্রথম ভারতীয় প্রধান বিচারপতির নাম রমেশচন্দ্র মিত্র আর প্রথম পূর্ণকালীন ভারতীয় প্রধান বিচারপতি ছিলেন ফণিভূষণ চক্রবর্তী। তবে প্রথম ভারতীয় বিচারপতি ছিলেন শম্ভুনাথ পন্ডিত।
ইনি একটি বইতে ব্রিটিশ বিচার ব্যাবস্থার ত্রটি গুলি সবার সামনে তুলে ধরেছিলেন, প্রথমে সাধারণ কর্মী হিসেবে আদালতে যোগদেন তারপর মহুরির পদে নিয়োগ হন , সেই সময় তিনি ঐ বইটি লিখেছিলেন।
![]() |
| বর্তমানে কলকাতা হাইকোর্ট |
কলকাতার এই লাল হলুদ বাড়িটি এখনো মানুষদের বিচার দিয়ে যাচ্ছে, তবে শুধু মাত্র পশ্চিমবঙ্গের মানুষের নয় আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের বিচার ব্যাবস্থার এক্তিয়ার রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের।
ছবি সূত্র - internet
তথ্য সূত্র - Wikipedia,
https://victorianweb.org/art/architecture/granville/2.html
http://double-dolphin.blogspot.com/search?q=High+court
- Get link
- X
- Other Apps









Comments