- Get link
 - X
 - Other Apps
 
Posted by
Tiki liki
on
- Get link
 - X
 - Other Apps
 
![]()  | 
| ইঙ্গ আফগান ওয়ার মেমোরিয়াল | 
আফগানিস্তান কয়েকদিন আগে খুব প্রচলিত ছিল এই নামটি, বা বলা ভালো দেশটি। কিন্তু জানলে অবাক হয়ে যে একসময় ব্রিটিশরা যখন ভারত দখল করে শাসন করতো তখন ইঙ্গ আফগানের মধ্যে যুদ্ধ ঘটেছিল, এবং সেই যুদ্ধে বেশির ভাগ সময়টা দুঃখের বিষয়। সেই দিকে আর গেলাম না, এই যুদ্ধে জন্য স্মারক রয়েছে আমাদের কলকাতায়। Times Of India একটি প্রবন্ধে People’s Green Society র গবেষক মৌমিতা সাহা জানান যে সেই সময় ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে বেশিরভাগ মানুষ ছিল বাঙালি। তার কথায় “Most of the troops were from the headquarters of the Bengal Artillery. This is why the war memorial was built here,” আর সেই জন্য সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে এটি তৈরি করা হয়েছে। আসলে আফগান ইঙ্গ দের মধ্যে যুদ্ধ কারণ ছিল রাশিয়া, এখানে বলে রাখা দরকার যে তখন ব্রিটিশ সেনারা ছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে, মানে ভারতে যেইসব সেনাবাহিনী এসেছিল। 1837 সাল নাগাদ ব্রিটিশরা দেখছিল রাশিয়া তাদের দেশের মাপকাঠি বাড়িয়ে নিচ্ছিল, এই দিকে তৎকালীন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দেখেছে রাশিয়া ক্রমশই ভারতে দিকে আসতে শুরু করেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ঠিক করলো আফগানিস্তান কে তাদের হাতের মুঠোয় রাখতে হবে বা তাদের দেশকে দখল করে নিতে হবে। এই আফগানিস্তান ছিল তখন কয়েক উপজাতিদের প্রধান অঞ্চল আর এর রাজধানী ছিল কাবুলে, আর এর আফগানিস্তান কে শাসন করতো আমির দোস্ত মহম্মদ খান। তৎকালীন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি শাসন কর্তারা এই শাসকের সাথে কথা বলে, কিন্তু আমির দোস্ত মহম্মদ খান একটা জিনিস চেয়েছিল, জানা গেছে আমির দোস্ত মহম্মদ বলেন যে আপনারা যদি শিখ সম্প্রদায়ের এলাকা আমার সাথে যুক্ত হয়ে আমার হয়ে নিতে পারেন তাহলে তো কোনো কথাই নেই। কিন্তু শিখ রা জানান যে তারা কোনো ভাবেই নিজেদের জায়গা ছাড়বে না। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমির দোস্ত মহম্মদ খান রাশিয়া দিকে চলে যায়। ব্রিটিশরা এমনি বিপদের মধ্যে ছিল এর জন্য তারা আরো বিপদে পড়লো, এই জন্য 1839 সালে জেনারেল স্যার জন কেন এর নেতৃত্বে কুড়ি হাজার সেনাবাহিনী নিয়ে আফগানিস্তানের উপর হামলা চালায়, আর এই কুড়ি হাজার সেনাবাহিনীর মধ্যে বেশিরভাগই ছিল বাঙালি এবং ব্রিটিশ। এই বছর কান্দাহার দখল করে ব্রিটিশরা। ওখানে শাহ সুজা দুরানী কে রাজপাঠ দেওয়া হলো এবং ওখানে মানে কাবুলে কয়েক বাহিনী ব্রিটিশ সৈন্য রাখা হয়েছে। ব্রিটিশ সেনারা যখন ফেরত আসছিল তখন তারা গজনী তে একটা ফোর্টে ছিল এবং সেই ফোর্টের এমূদেওয়াল ছিল যে ভাঙবে না। কিন্তু জুলাই মাসে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী সেই ফোর্ট দখল করে নেয় এবং কাবুলের দিকে অগ্রসর হয়। আর এই ফাঁপরে পরে আমির দোস্ত মহম্মদ খান পালিয়ে যায়। অবশেষে কাবুল দখল করে নেয় ব্রিটিশ সেনারা। 1840 সাল নাগাদ আমির দোস্ত মহম্মদ খান আত্মসমর্পণ করে নেয় এবং সেটা নাকি কলকাতায়।
![]()  | 
| গজনী দখল করেছে ব্রিটিশ সেনারা | 
কিন্তু 1841 সালে মোড় ঘুরতে শুরু করে কাবুলে কিছু ব্রিটিশ সৈন্য রাখা হয় এবং বাকি সৈন্যবাহিনী ভারতের দিকে রওনা হয়। এক নম্বর কারণ আফগান ব্রিটিশদের আয়ত্তে চলে এসেছে আর দুই নম্বর কারণ রাশিয়া আক্রমণ করতে পারবে না। কিন্তু আগেই বলেছি মোড় ঘুরতে শুরু করে দিয়েছে, নতুন শাসকের সঙ্গে ব্রিটিশদের সম্পর্ক ক্রমশই খারাপ হতে থাকে, শোনা যায় বিদ্রোহ হয় আর এই দিকে দোস্ত মহম্মদ খান এর ছেলেকে দায়ি করা হয়, ইনি ছিলেন মহম্মদ আকবর খান। এই রকম পরিস্থিতিতে নিহত হন স্যার উইলিয়াম ম্যাগন্যাকহ্যাটন। এবং এরই সাথে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীকে কাবুলে বন্দি করা হয়। এরফলে ঠিক হয় যে ব্রিটিশ আত্মসমর্পণ করবে, সেই সময় ব্রিটিশ সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি জেনারেল স্যার উইলিয়াম ইলেফেনস্টোন। হয়তো স্যার উইলিয়াম ম্যাগন্যাকহ্যাটন পরেই তার স্থান ছিল, তিনি ঠিক করলেন তার সমস্ত সৈন্যবাহিনী কাছে যা বারুদ এবং কামান রয়েছে সেগুলো তারা দিয়ে দেবেন এবং তার বদলে তাদের কে ভারতে ফিরে যেতে দিতে হবে।
![]()  | 
| আফগান উপজাতি ও বরফে আরষ্ট ব্রিটিশ সেনারা | 
এই নিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল নিশ্চয়ই, জানা গেছে চার হাজার পাঁচশ ব্রিটিশ সৈন্য এবং বারশো সাপোর্ট স্টাফ ছিল আর এই কথা জানা গেছে সালটি ছিল 1842. কিন্তু যেই সময়ে তারা ভারতে ফিরে আসছিল তখন ছিল শীতকাল আর সেই সময়ে রাস্তা ছিল মৃত্যুর ফাঁদ, অন্য দিকে তাদের উপর বিভিন্ন উপজাতি হামলা চালায় যার ফলে বারুদ ছাড়া বন্দুক কাজেই আসলো না বিভিন্ন ভারতীয় সৈন মারা যায় কিছু সৈন কে তো আটক করে রাখা হয়। শেষ পর্যন্ত ডাক্তার উইলিয়াম ব্রেডন কোনো রকমে জালালাবাদ পৌঁছায় এবং তিনি তার উপরের কর্মচারী মেজর জেনারেল স্যার রবার্ট সেল কে সমস্ত ঘটনা বলেন। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে সেল কী করছিল জালালাবাদে ? আসলে তিনি কাবুল থেকে ফিরে জালালাবাদে ওঠেন কিন্তু জালালাবাদ থেকে কান্দাহার যাওয়ার সময় বা কোনো কিছু ছিল না, তাই তিনি জালালাবাদে একটি ঘাঁটি তৈরি করেন। এরপর এই খবর পৌঁছে যায় মেজর জেনারেল জর্জ পালক এর কাছে।
![]()  | 
| মেজর জেনারেল জর্জ পালক | 
তিনি ঠিক এর উপযুক্ত শিক্ষা দিতে হবে দোস্ত মহম্মদ খান ছেলে মহম্মদ আকবর খান কে। তিনি সৈন্যবাহিনী নিয়ে জালালাবাদ পাঠান এবং তার সৈন্যবাহিনী এবং মেজর জেনারেল রর্বাট সেল এর দুই সৈন্যবাহিনী কাবুলে আক্রমণ চালায়, দুই সৈন্যবাহিনী আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েন মহম্মদ আকবর খান অবশেষে তিনি হেরে এবং আবার কাবুলে ব্রিটিশ হাতে চলে আসে আসলে এই ঘটনা গুলি ঘটে সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাসে। কিন্তু ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ঠিক করে তারা ভারতীয় এবং ব্রিটিশ সৈন্য বাহিনী কে আফগানিস্তান থেকে নিয়ে চলে আসার সিদ্ধান্ত নেয়, মেজর জেনারেলরা লক্ষ্য করে যে ভারতীয় সৈন্যদের অনেক জ্বালা যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে শুধু তাই নয়, ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত ভারতীয় সেনাবাহিনী যথেষ্ট রাগ করেছিল।
![]()  | 
| আফগান ওয়ার এর ফলক | 
এই সব পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ এবং ভারতীয় সেনারা ব্রিটিশ শাসিত ভারতে চলে আসলেও আফগানিস্তান বেশিদিন স্থায়ী হয়নি, আফগানিস্তানে শাহ সুজা দুরানী আফগানিস্তানে খুন হয়। এই ভাবে দোস্ত মহম্মদ খান আফগানিস্তানের প্রধান হয়ে বসেন এবং তার ছেলে মহম্মদ আকবর খান কে খুন করা হয়, অনেকের ধারণা তার কলেরা হয়েছিল সেটায় মারা যায় কিন্তু সেটা নাকি তার বাবা করেছিল। এবার আসি আমাদের কলকাতার আফগান ওয়ার মেমোরিয়াল এ, কলকাতার আফগান ওয়ার মেমোরিয়াল হলো দমদমের অডিন্যান্স ফেক্টির মধ্যেই রয়েছে, একদিকে অডিন্যান্স ফেক্টির আর অন্য দিকে ইঙ্গ আফগান ওয়ার মেমোরিয়াল। আসলে এই ওয়ার মেমোরিয়াল তৈরি 1844 সালে প্রথম ইঙ্গ আফগান যুদ্ধে শেষের কিছু বছর পর। মেমোরিয়াল টি তে রয়েছে একটি সাদা স্তম্ভ নিচে রয়েছে সব নাম যারা মারা যায় এই যুদ্ধে আর উপরে রয়েছে খাঁচ কাটা কিছু অংশ একটা একটু সরু তার উপর একটি লোহার কিছু বসানো রয়েছে। দুর থেকে দেখলে মনে হয় শহীদ মিনার মানে অকল্যান্ড মনুমেন্ট। তবে দমদমে কেন তৈরি হলো এই মনুমেন্ট, সেই বিষয়ে অনেক মতামত দেখা যায়। আসলে এই মনুমেন্ট পাশেই রয়েছে দমদম অডিন্যান্স ফেক্টির। তাই অনেক মনে করেন বন্দুকের দুম দুম আওয়াজ থেকে এই জায়গাটির নাম আবার ঐতিহাসিকরা জানিয়েছেন অনেক আগে থেকেই দমদম যায়গাটি ছিল। তাদের মতে এই যায়গা "দমদমা বা দুমাদুমা" নামে পরিচিতি ছিল, আসলে এটি একটি ফার্সি শব্দ যার মানে হল ঢিপি। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে কেন এই মনুমেন্ট বা ইঙ্গ আফগান ওয়ার মেমোরিয়াল পাসে কেন এই বন্দুকের কারখানা তৈরি হলো ? এখানে জানিয়ে রাখা দরকার যে এই বন্দুকের কারখানা কিন্তু ব্রিটিশদের তৈরি, আসলে 1846 সালে ব্রিটিশ সরকার এই বন্দুক কারখানা তৈরি করেন, আসলে সেই সময় ব্রিটিশ সরকারের কাছে ঠিক মতো বারুদ ছিল না, এমনকি ভালো বারুদ কিংবা বন্দুক তৈরির কারখানা তৈরি হয়েছিল না।
![]()  | 
| সেই কারখানা  | 
ব্রিটিশরা  বারবার বন্দুক বা বারুদের জন্য মার খাচ্ছিল, জানা যায় ব্রিটিশ সেনারা গজনী প্রাসাদের দেওয়া ভাঙতে পারেনি কারণ ছিল কামান এবং বারুদ, অবশেষে প্রাসাদের দরজা ভেঙে যায়। আর এই সব ভেবে ভারতে তারা বন্দুকের কারখানা তৈরি করে। অসুবিধা এই কারখানাটা ঐ মেমোরিয়াল পাসে তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এই মেমোরিয়ালের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এর সামান্য কাজ, এখনো দমদম থেকে যেতে গেল এই মেমোরিয়ালটি দেখালে বারবার সেই ব্রিটিশ আমলের কলকাতার কথা মনে পড়ে।
ছবি সূত্র - internet 
তথ্য সূত্র - https://rangandatta.wordpress.com/2015/02/26/afghan-war-memorial-dum-dum-kolkata-calcutta/
Afghan war memorial
British Kolkata
Calcutta
Dum Dum
Dum Dum Ordnance factory
Heritage
History
History Of Afghan war memorial
- Get link
 - X
 - Other Apps
 






Comments