- Get link
- X
- Other Apps
Posted by
Tiki liki
on
- Get link
- X
- Other Apps
![]() |
| United Service Club, Chowringhee |
ক্লাব, দুর্গাপুজোর কিংবা কালী পুজো বা যেকোনো কিছুর জন্য ক্লাব মাস্ট। প্রতিটি পাড়ায় ক্লাব আছেই। কোন বাড়ির লোকজন অসুস্থ হলে সাহায্যের জন্য ক্লাবের ছেলেরা চলে আসবে। ক্লাব থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এই ক্লাব ব্যপারটা আসলো কীভাবে ? ইতিহাসের দিক থেকে দেখতে গেলে কিছু যাদের নিজেদের মধ্যে সম্পূর্ণ অচেনা লোকজন একসাথে থাকলে তাদের মধ্যে বিভিন্ন উপাদান আদান প্রদানের মাধ্যমে অনাত্মীয়রা আত্মীয় হয়ে গেলে একটি গোষ্ঠী তৈরি হলে তাদের ক্লাব তৈরি হয়। ক্লাব শব্দটির উৎপত্তি হিসেবে বলা হয়েছে গিঁট হিসাবে কয়েকজন মানুষ। আবার এই কথাও বলা হয় যে সদস্যরা তাদের সমাবেশের খরচ বহন করার জন্য এই শব্দটি ব্যবহার করেছ। প্রাচীন ইংরেজিতে এই club কে clubbed বলে উল্লেখ করা হয়েছে, কারণ হিসেবে বলা যায় প্রাচীনতম ইংলিশ ক্লাবগুলি ছিল একে অপরের সাথে খাওয়া বা পান করার উদ্দেশ্যে বন্ধুদের অনানুষ্ঠানিক পর্যায়ক্রমিক সমাবেশ। থমাস অক্লেভ (হেনরি IV-এর সময়ে) লা কোর্ট ডি বোন কম্পাগনি (কোর্ট অফ গুড কোম্পানি) নামে এমন একটি ক্লাবের কথা উল্লেখ করেছেন, যার তিনি সদস্য ছিলেন। 1659 সালে জন অব্রে লেখেন, "আমরা এখন সরাইখানায় সোডালিটি [একটি সমাজ, সমিতি, বা যে কোনো ধরনের ভ্রাতৃত্ব] জন্য ক্লাবে শব্দটি ব্যবহার করি। এবার বলি আমাদের কলকাতার ব্রিটিশ ক্লাব গুলির কথা, সবাই জানে এই সব ক্লাবে ভারতীয়দের ঢোকা নিষেধ ছিল। কলকাতার সেই সময় ব্রিটিশ ক্লাব গুলির মধ্যে অন্যতম ছিল, ইউনাইটেড সার্ভিস ক্লাব।
ব্রিটিশরা যখন কলকাতা নিজেদের ঘাঁটি গড়ে তুলেছিল, তারা তাদের লন্ডনের জীবনযাত্রার অনেক কিছুই মিস করতো, তাদের মধ্যে অন্যতম হলো ক্লাব কালচার। কিন্তু আস্তে আস্তে তখনকার ক্যালকাটাতে তারা প্রায় বারো খানা ক্লাব খুলে ফেলেছিল যেমন বেঙ্গল ক্লাব, টলি ক্লাব, স্যাটারডে ক্লাব, রয়্যাল ক্যালকাটা গলফ ক্লাব, রয়্যাল ক্যালকাটা টার্ফ ক্লাব, ক্যালকাটা ক্লাব, ডালহৌসি ইনস্টিটিউট ইত্যাদি। তবে অনেক ক্লাব উঠে গেলেও সেই ক্লাব গুলির বাড়ি গুলি এখনো নিজেদের আধিপত্য ধরে রেখেছে। তবে উপরুক্ত ক্লাব গুলির সদস্য হতে গেলে কয়েকটি স্তর ছিল, যেমন যে বা যারা সদস্য হবে তাদের সামাজিক কুসংস্কার থাকতে হবে এবং তাদের শ্রেণীবিভাজন থাকতে হবে মানে এখনকার দিনে যাকে বলে "class" বা নাক উঁচু আর সেজন্যই সদস্য সংখ্যাও সীমাবদ্ধ ছিল। একটি ক্লাবের সদস্য হতে গেলে, অন্য ক্লাবের সদস্য অনুমতি দিলে তিনি সেই সদস্য হতে পারে। আরো একটা উপায় ছিল যে সদস্যের কাজ যদি ক্লাবের উপযুক্ত হয় তবে সে সহজেই, ক্লাবের সদস্য হতে পারতো। কোনো কোনো ক্লাব আবার শুধু মাত্র মিলিটারি বা যারা ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর অংশ ছিল তাদের কে তাদেরকে সদস্য হতে অনুমিত দিত। কিন্তু ক্লাব গুলির একটাই শর্ত একটাই কোনো ভারতাই ক্লাবের অংশ হতে পারবে না, সবাই জানে এই ক্লাব গুলির বাইরে লেখা থাকতো ভারতীয় আর কুকুরদের ভেতরে ঢোকা নিষেধ। একটি ক্লাব শুরু হয়েছে যখন কয়েক জন ব্যক্তি খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেয় যে এই শহরে একটি ক্লাবের প্রয়োজন বোঝাই যাচ্ছে এআ এই বিজ্ঞাপন ব্রিটিশরা দিয়েছিল। সেখানে এই কথাও বলা হয়েছিল, যারা বিজ্ঞাপন দেখে আসবেন, তাদের কে ক্লাবের ফাউন্ডিং মেম্বার হিসেবে বিবেচিত করা হবে। তারপর তাদের মধ্যে ভোটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট এবং সেক্রেটারি নির্বাচিত করা হবে। সেই হিসেবে বেঙ্গল ক্যাথলিক হেরাল্ড একটি নতুন ক্লাব তৈরির উদ্দেশ্যে 1845 সালের মে মাসের তিন তারিখে তৎকালীন গভর্নর জেনারেল স্যার হেনরি হার্ডিঞ্জের কাছে অনুমতি চায় এবং পেয়েও যায়। সেই অনুমতি নিয়ে 1845 সালের এপ্রিল মাসের 24 তারিখে তৈরি হয় অবশ্য অনুমতির আগেই কয়েকজন ব্রিটিশ অফিসার এক শুক্রবার বৈঠক করেন। অনুমতি পেয়ে এই নতুন ক্লাবের নাম হয় বেঙ্গল মিলিটারি ক্লাব। এই ক্লাবটির বেশীরভাগ মেম্বার ছিলেন রাণী ভিক্টোরিয়ার বিভিন্ন অফিসার এবং ব্রিটিশ নৌবাহিনীর বিভিন্ন কর্মচারী এবং সৈনরা। ঐ বছরই আগস্ট মাসের সাত তারিখে দ্য বেঙ্গল হরকারু একটি রিপোর্ট জানিয়েছে বেঙ্গল মিলিটারি ক্লাব এখন 600 সদস্য হয়েছে। আসলে এই ক্লাবটি সম্পুর্ণ একটি মিলিটারি ক্লাব পরিনত হয়েছিল, যখন রাণী লোকেরা তৎকালীন ক্যালকাটায় আসত তখন ক্লাবটি তাদের বাড়িতে পরিণত হয়েযত। তাছাড়া প্রেসিডেন্সিতে বসবাসকারী ব্রিটিশরা আসতো সময় কাটাতে, তবে এই ক্লাবের নিয়ম কানুন ছিল খুব কঠিন, নাম শুনলেই বোঝা যায়। আর সেই জন্য সব ইউরোপীয়রা এই ক্লাবের সদস্য হতে পারতো না। এই ক্লাবের সদস্যরা ইউরোপীয় ব্যবসায়ীদের বলতো boxwallahs আর counter jumpers. এমনকি তৎকালীন কলকাতা সবচেয়ে বড়ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের ম্যানেজার ও এই ক্লাবের সদস্য হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি ভাবতে পারেননি যে এই ক্লাবের সদস্য হতে পারবেন না। আসলে সেই সময় কিংবা এখনো কেউ যদি কোনো চর্চিত বা বড় কিছু সদস্য হতে পারে তাহলে আর কথাই নেই। সে যাই হোক প্রসঙ্গে ফিরে আসি, এই ক্লাবের আরো একটি ব্যাপার ছিলো, এই ক্লাবের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও যারা এই ক্লাবের সার্ভিস সাথে যুক্ত ছিল তাদের ও এই ক্লাবের ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হতো না। পুলিশ থেকে শুরু করে বনদফতের সদস্য এমনকি যারা দ্য বেঙ্গল পাইলট সার্ভিসে সদস্য যারা বঙ্গোপসাগর ও হুগলি নদী শিপিং পরিচালনা করে তাদের এখানে ঢোকা নিষেধ ছিল। ব্যাস আর কী ক্লাবে টাকার টান পড়লো, উল্লেখ্য যে সেই সময় ক্লাবে একটি কমিটি ছিল যারা টাকা পয়সার হিসাব রাখতো তারা দেখল যে রাজস্ব মাধ্যমে ক্লাব চলে না। এই বিষয়ে মন্টাগু ম্যাসি ব্যঙ্গ করে বলেছিলেন "very wisely threw open wide the heavenly portals and admitted within their celestial and sacres precincts members of other government services " মানে এত আরাম শুধুমাত্র স্বর্গ গেলেই পাওয়া যায় যা খুব বুদ্ধির সাথে এই ক্লাব পুরন করতো। তবে ক্লাব কিন্তু বন্ধ হয়নি, মার্চ মাসের 15 তারিখ 1853 সালে এই ক্লাবের নাম পাল্টে হয় বেঙ্গল ইউনাইটেড সার্ভিস ক্লাব। এই ক্লাবের ঢোকার জন্য সদস্যদের 150 টাকা দিতে হতো, তাছাড়া পনেরো টাকা দিতে হতো ডনেসন হিসাবে লাইব্রেরী ফান্ডের ও বিলিয়ার্ড ফান্ডের জন্যে। সদস্যদের জন্য প্রতি বছর আঠেরো টাকা চাঁদা স্থির করা হয়েছিল, এবং সেটা আগে থেকেই দিতে হতো। আর যারা কলকাতা থাকতো তাদের চাঁদা ছিল দশ টাকা। যদি কেউ অনুপস্থিত থাকে তাহলে তাকে বছরে আঠেরো টাকা দিতে হতো। জানা যায় এই ক্লাবের স্থায়ী ও অস্থায়ী সদস্যদের জন্য আলাদা আলাদা ঘর ছিল এবং একটি ঘরে একজন ভারতীয় মহিলা ছিল, শোনা যায় তাঁর স্বামী ছিলেন একজন ICS. তাহলে নিশ্চয়ই তার স্বামী একজন ব্রিটিশ ছিলেন আর সেই মহিলা ছিলেন বাঙালি। কিন্তু তার পরিচয় কী ছিল সেটি এখন জানা যায় নি। এই ক্লাবের সব সদস্য ছিলো পুরুষ, তার এই ক্লাবের সদসদের স্ত্রী রা ক্লাবের বিভিন্ন প্রাঙ্গণ ব্যবহার করতেন এবং তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল বলে জানা যায়।বেঙ্গল ইউনাইটেড সার্ভিস ক্লাবের সদস্য সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে তাই নতুন ভবনের ব্যবস্থা করা হয়।
![]() |
| 1827 সালে United Service Club |
এখন ইউনাইটেড সার্ভিস ক্লাব টি দাঁড়িয়ে আছে বলে রাখা দরকার যে এই ক্লাবের প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন Lt. Col. The Hon. J. Finch. চৌরিঙ্গি থেকে এই ক্লাবের ভবনটি বিস্তৃত ছিল কিড স্ট্রিট বর্তমানে যার নাম ডাঃ এমডি ইসহাক রোড। এছাড়া পার্ক স্ট্রিট বিভিন্ন ভবনে এই ক্লাবের মালিকানা ছিল, এ ছাড়া আর বলা হয় সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার দখলে থাকা ভবনটি একসময় অন্য একজন বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের বাড়ি ছিল। তার নাম জন পামার, এবং তিনি "বণিকদের যুবরাজ" হিসাবে পরিচিত ছিলেন। পালমার 18 লালবাজার স্ট্রিটে প্লটটির মালিক ছিলেন, যেখানে এখন কলকাতা পুলিশের সদর দফতর রয়েছে। কলকাতায় একটি পাড়া রয়েছে যা এখনও পালমার বাজার নামে পরিচিত, সম্ভবত কারণ জন পামার এই বাজারটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। হায়, পামারকে নর্থ পার্ক স্ট্রিট কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছিল যা গড চার্চের সমাবেশের পথ তৈরি করার জন্য পরিষ্কার করা হয়েছিল এবং এখন তার কবরের কোন চিহ্ন অবশিষ্ট নেই। 1905 সাল নাগাদ এই ক্লাবের মালিকানা যতদুর ধারণা করা যায় যে, সেই সময়ের কলকাতা বিখ্যাত ফার্ম ম্যাকিনটোস বার্ন অ্যান্ড কোং হাতে চলে আসে। কলকাতার চৌরঙ্গীর একটি কোন ঘেঁসে দাঁড়িয়ে আছে এই ইউনাইটেড সার্ভিস ক্লাব টি। এই ক্লাবের প্রাক্তন সদস্য জিম পিয়ারসন এই ক্লাবের আকৃতি মাল্টিজ ক্রসের মতো বলেছেন, কারণ হিসেবে বলা হয় একে তো কোনো করে এই ক্লাবের অবস্থান, আর বিল্ডিং টির ক্রুশ বা বলা ভালো যোগ চিহ্নের আকৃতি হওয়ার জন্য হাওয়া বাতাস বাড়িটি মধ্যে খেলা করতে পারতো। কলকাতার যে কোনো ইন্দো ইউরোপীয়ান স্থাপত্যে গ্রীকদের কোরেন্থিয়ান পিলার দেখা যায় এখানেও সেইটা বাদ যায়নি এমনকি কী ত্রিভুজাকৃতি পেডিমেন্ট এখানে রয়েছে। এই যোগ আকৃতির বিল্ডিং এ জানালা গুলি ভেনিসিয়ান আর্চ
| Maltese Cross |
গুলির মত দেখতে বলে জানিয়েছেন জিম পিয়ারসন। এই বিল্ডিং এ সেই সময় সব ধরনের ব্যবস্থা ছিল।
1908 সালে, যখন নতুন বেঙ্গল ক্লাব ভবন নির্মিত হচ্ছিল, ইউনাইটেড সার্ভিস ক্লাব বেঙ্গল ক্লাবের সদস্যদের তাদের সুবিধাগুলি ব্যবহার করার অনুমতি দেয়। এর দীর্ঘ ইতিহাসে এটিই একমাত্র সময় হতে পারে যখন তারা "বক্সওয়ালাদের" প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। ভারতের স্বাধীনতা পর এই ক্লাবটি ছিল অনেক স্বাধীনতা পর ক্লাবের সদস্য পদ ছেড়ে দিয়ে ইংল্যান্ড চলে যায়, আবার অনেক সদস্য পদ ছেড়েদেয় নি কারণ ক্লাব টি বন্ধ হয়ে যায়। অবশেষে 1949 সালে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। তবে এই ক্লাবের জিওলজিক্যাল সোইটি ওফ ইন্ডিয়া কাজ করেছিল বলে জানা যায়,
![]() |
আর যদি পাখির চোখ দিয়ে দেখেন মানে দ্রোণ ক্যামেরার মাধ্যমে দেখেন তাহলে কেন বার যোগ চিহ্নের কথা বা ক্রুস চিহ্ন কথা বলছি বুঝতে পারবেন।
![]() |
| পাখির চোখে United Service Club |
তবে শুধু মাত্র কলকাতায় এই রকম যোগ বা ক্রুস চিহ্নিত স্থাপত্য নেই আরো একটি আছে দিল্লি থেকে একশো কিলোমিটার দূরে যার নাম Basilica of our lady of grace. কলকাতায় এখনো রয়েছে ক্লাব এবং ক্লাব কালচার।
ছবি সূত্র - internet এবং পুরনো কলকাতার চলচিত্র
তথ্য সূত্র - https://www.telegraphindia.com/west-bengal/maltese-cross-in-city-heart/cid/1258480
British club in Kolkata
Chowrangi History
Clubs of Calcutta
colonial calcutta
Heritage
Heritage Buildings of Kolkata
Kolkata
United Service Club
- Get link
- X
- Other Apps




Comments