- Get link
- X
- Other Apps
Posted by
Tiki liki
on
- Get link
- X
- Other Apps
| ফিয়ার্স লেন |
'আমিও ফিয়ার লেন ছেড়ে দিয়ে—হঠকারিতায়
মাইল মাইল পথ হেঁটে—দেয়ালের পাশে
দাঁড়ালাম বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে গিয়ে—টেরিটিবাজারে
চীনেবাদামের খোসার মতন বিশুষ্ক বাতাসে।'
-জীবনানন্দ দাশ
কয়েকদিন আগে কলকাতার এই রাস্তা দেখেছিল এক অভাবনীয় আন্দোলন। কলকাতায় বিভিন্ন রাস্তা রয়েছে এবং তাদের নামের বিভিন্ন ইতিহাস রয়েছে, তাদের অন্যতম হলো এই রাজপথ। এই রাস্তার আগে নাম ছিলো, চুন্নাম গলি বা চুনামগলি এই নামের একটি গল্প আছে সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন এই গলি রাস্তার নাম প্রথম থেকেই চুনামগলি ছিল কারণ হিসেবে বলা হয়, এই জায়গাটি কলকাতার এমন একটি জায়গা যেখানে শুধু মাত্র চুন বিক্রেতারা বসবাস করতো। যার ফলে এখানে এককালে অনেক চুনের দোকান ছিল। কিন্তু ব্রিটিশরা এই গলি কে চুন্নাম গলি বা চুনাগলি বলে অভিহিত করতো। এর পর আবার এই রাস্তার নাম পরিবর্তন হয় যখন এক বিচারপতি ফিয়ার্স নাম অনুসারে এই রাস্তার নাম হয় ফিয়ার্স লেন। 1889 থেকে 1890 সালে। অনেকে মনে করেন যে তিনি ছিলেন তৎকালীন কলকাতা হাইকোর্টের অন্যতম উল্লেখযোগ্য বিচারপতি। এবং তিনি কলকাতা হাইকোর্টের চিফ জাস্টিস ছিলেন। বলা হয় যে তিনি এমন একজন বিচারপতি ছিলেন যিনি শাসক ও এবং যাদের উপর শাসন করছে অর্থাৎ বাঙালি তথা ভারতীয়দের মধ্যে একটি ব্রিজ তৈরির চেষ্টা করেন। তিনি সেই সময় তথাকথিত ভারতীদের কাছ থেকে যথেষ্ট সম্মান পেয়েছিলেন। বলা হয় যে তিনি ভারতীয় বন্ধু ছিলেন যারা সেই সময় নতুন ইংল্যান্ডে যেত। এই ফিয়ার্স ছিলেন রেভারেন্ড জে ফিয়ার্স ছেলে ছিলেন তিনি কলকাতা বা ভারতে এসেছিলেন কী না সেইটা জানতে পারিনি। তবে এই ফিয়ার্স সাহেব 1825 সালের ফেব্রুয়ারি মাসের নয় তারিখে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা করেছিলেন, এছাড়াও তিনি ক্লেয়ার কলেজের ফেলো লেকচার ছিলেন। এবং বহু আইনি বিষয়ের ওপর বই লিখেছিলেন। তার উল্লেখযোগ্য বই গুলি হলো, Puisne Judge of the High Court, Calcutta, 1864-76: Chief Justice of Ceylon, 1877-79: Knighted unsuccessful candidate for Parliament: author of The Aryan Village in India and Ceylon, International Trade, ইত্যাদি। সেই সময় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ফিয়ার্স একটি কলকাতা হাইকোর্টে একটি বেঞ্চ গঠন করেছিলেন, এই বেঞ্চের উদ্দেশ্য ছিল তৎকালীন কলকাতা মিউনিসিপ্যালিটির মিথ্যা গুলো তুলে ধরা। হয়তো কোনো এক বা একাধিক মানুষ তৎকালীন কলকাতা মিউনিসিপ্যালিটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। সেই বেঞ্চে বলা হয়েছে যদি লর্ড ইউলিক ব্রাউন এবং তার পারিষদগণ তাদের নিজেদের পদ ধরে রাখে তবে এটি শেষ অবধি ধরে রাখতে পারবে । এবং চেয়ারম্যান লর্ড ব্রাউনের কাছে বক্তব্য রাখার সুযোগ পাবে এক ঘন্টার কম। তবে এই সময় ঠিক করেছিলেন লর্ড ব্রাউন নিজেই। চেয়ারম্যান এই দমবন্ধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হাইকোর্টে জাস্টিস ফিয়ার্সের বেঞ্চ এই ব্যবস্থা তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন। এবং তুলে নেওয়া হয়। এখন স্বৈরাচারী চেয়ারম্যান ঠিক করেছিলেন এই বেঞ্চের নির্দেশকে তার আয়ত্বে করতে ঝড়ের মতো কয়েকটি সাধারণ কমিটির মিটিং ডেকেছিলেন। এবং বিবিধ ব্যবসা সহায়তার জন্য একটি সাধারণ কমিটি নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছিল। 1876 সালের আগস্ট মাসের সাত তারিখে অবসর গ্রহণ করেন। সেই সময় ব্রিটিশ সম্প্রদায়ের ও ইউরোপীয়দের কাছে বিশেষ সহানুভূতি পায়নি এমনকি তাকে সম্মান জানানো হয়নি কিন্তু ভারতীয়দের কাছে তিনি যঠেষ্ট সম্মান পেয়েছিলেন, সেকথা তিনি নিজেই জানিয়েছেন। রাজা রামনাথ ঠাকুরের নেতৃত্বে বেথুন সোসাইটির একটি ডেপুটেশন জমা দেবে মিস্টার ফিয়ার্সের বাড়িতে গিয়ে। অনুমান করাই যে মিস্টার ফিয়ার্সের সবসময় ভারতীয়দের পাশে থাকার চেষ্টা করছে। রাজা রামনাথ ঠাকুর ডেপুটেশন কমিটির সদস্যদের সঙ্গে ফিয়ার্স সাহেবের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়, এবং রাজা রামনাথ ঠাকুর ফিয়ার্স সাহেবের সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেন এবং বিশেষ সম্মান জানান। কিন্তু ফিয়ার্স সাহেবের মৃত্যুর পর এই তাকে সম্মান জানানোর জন্য এই রাস্তার নাম তার নামে নামকরণ করা হয়। এছাড়াও এই রাস্তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে বিভিন্ন স্মৃতি, এই শুরু হয়েছে টেরেটিরি বাজারের পেছন দিকে থেকে আর শেষ হয়েছে কলুটোলায় মানে নাখোদা মসজিদ কাছে। এছাড়া এই রাস্তায় রয়েছে জড়িয়ে আছে শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসের স্মৃতি। কলুটোলায় ধরদের বাড়িতে শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসের পায়ের ধুলা পড়েছিল, জানা যায় 1871 সালে রামকৃষ্ণ পরমহংসের এসেছিলেন চেতন্যসভায় নাম
সংকীর্তণ শুনতে শুনতে ধ্যানমগ্ন হন।
এই রাস্তায় রয়েছে একশো বছর পুরনো হাজী আলাউদ্দিন সুইটস এর মিষ্টির দোকান।
![]() |
| সেই দোকান |
আরো অনেক কিছু রয়েছে এই রাস্তা জড়িয়ে।
কলকাতার কাউকে ভোলেনি আর ভুলবেও না, ফিয়ার্স সাহেব কে কিংবা অন্য কাউকে।
ধন্যবাদ শ্রী Salil Hore মহাশয় কে 🙏
ছবি সূত্র - internet
তথ্য সূত্র - P.T. NAIR
- Get link
- X
- Other Apps


.jpg)
Comments