- Get link
- X
- Other Apps
Posted by
Tiki liki
on
- Get link
- X
- Other Apps
![]() |
| ভবানীপুর |
ভবানীপুর এলাকায় মধ্যেই পড়ে কাঁসারীপারা লেন। এখন নাম দেখেই বুঝতে পারছেন কেন এই লেন এর কাঁসারীপাড়া, আসলে এই এলাকায় কাঁসা নিয়ে যারা কাজ করে তাদের এখানে চোদ্দো পুরুষের বাস এই এলাকায়। জানা যায় অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে গোবিন্দপুর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে কাঁসারীরা এখানে বসতি স্থাপন করেছিল। তখন থেকেই এটি রূপ নারায়ণ নন্দন, বেণী নন্দনের মতো সুপরিচিত কারিগরদের আবাসস্থল ছিল, যাদের নাম মাত্র কয়েকজন," বলেছেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ। কাঁসারী বা যারা তামা ধাতু নিয়ে কাজ করে তাদের কথা পুরাণে উল্লেখ রয়েছে। ব্রাহ্মবৈবর্ত পুরাণে উল্লেখ আছে কংশকর বা কংস বা কংশ, একটি সংকর ধাতুর তৈরি, তারা নাকি বৈশ্য। শুধুমাত্র ভবানীপুর নয় এছাড়া কাঁসারীরা ছড়িয়ে আছে কলকাতার আরও বিভিন্ন জায়গায় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সিমলা অঞ্চল তাছাড়া জোড়াসাঁকো এরমধ্যে পরে। কাঁসারী বা পিতল নিয়ে যার কাজ করে তারা উত্তর কলকাতা এবং দক্ষিণ কলকাতার মধ্যে ছড়িয়ে আছে। কাঁসারীরা কাঁসা এবং পিতলের ধাতুর ব্যবসা করতো, শুধু মাত্র তাই নয় এই মানুষ যারা পরিচিত ছিল কাঁসারী হিসাবে তারা বেলমেটাল এবং সস্তা এনামেল এবং অ্যালুমিনিয়ামে পাত্রর প্রভাব কমে গেছিল বাঙালি পরিবার গুলিতে, তার বদলে কাঁচ এবং চীনামাটির পাত্রের প্রভাব প্রচুর পরিমাণে বেড়েছিল আর পরিষ্কার করতে ও সুবিধা। লক্ষ্য করে দেখেছি নব্বই দশকের বিয়ে বাড়ি এবং কোনো আনন্দ অনুষ্ঠানে ডিনার সেট বা কাপ ডিস সেটার দেওয়ার প্রচুর পরিমাণে প্রচোলন ছিল। কিন্তু বাঙালিদের মুখেভাত অনুষ্ঠানে কিন্তু কাঁসা থালা বাটি দেওয়ার প্রচলন ছিল এখনো হয়তো আছে। জানা যায় কিছু কাঁসারি পরিবার অনেক বছর ধরে শুধু কাঁসারি বা পিতলের ধাতুর কাজই করে চলেছিল। কিন্তু দক্ষিণ কলকাতার কাঁসারি পরিবার গুলি তাদের ষাঠ বছর ধরে চলা ঐতবাহি কাজকে ছেড়ে দিয়ে, অন্য কাজ করতে শুরু করে। জানা যায় তারা ঘোড়ার গাড়ি কোচ তৈরি করতো সেখানে যথেষ্ট লোহার কাজ ছিল। এরি মধ্যে শুরু হয়ে যায় বিশ্বযুদ্ধ ! তখন ভারত ছিল পরাধীন ব্রিটিশ সরকার হয়ে ভারত দুই বিশ্বযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিল। সেই সময় ভারতের নেতা দের ধারণা ছিল, ব্রিটিশ সরকার হয়ে বিশ্বযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করলে ভারত স্বাধীনতা পাবে! এখানে উল্লেখ করা দরকার যে অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন বিশ্বযুদ্ধ একটাই হয়েছিল মাঝখানে কিছু সময় যুদ্ধের বিরতি ছিল। আবার অনেক ঐতিহাসিক এই তথ্যটি সঠিক বলে মনে করেন না। কিন্তু কাঁসারি পাড়া সঙ্গে বিশ্বযুদ্ধের কী সম্পর্ক? আসলে সেই সময় কাঁসারিরা বিশ্বযুদ্ধের সৈনিকদের জন্য উনিফ্রম এমনকি সেই উনিফ্রমের জন্য পিতলের বোতাম, ব্যাজ এইসব তৈরি করছিল। শুধু তাই নয় তারা সোনা এবং রুপোর কাজ করেছিল, তাছাড়া বৈদ্যতিক সরঞ্জাম এবং ডাক্তারি অপারেশনের জন্য বিভিন্ন বিভিন্ন যন্ত্রপাতি তৈরি করছিল কাঁসারি পরিবার গুলি। ভবানীপুরের কাঁসারিপাড়া মানুষেরা এখন স্বর্ণকারে এবং রুপা কারে পরিনত হয়েছে। অনেক পরিবারি এখন বিভিন্ন ধাতু নিয়ে কাজ করে চলেছে। কাঁসারি পাড়া রোড এখন ভবানীপুরের বিভিন্ন রোডের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে, এখানে একটি চিঠির কথা বলে রাখা দরকার এই চিঠিটা লিখেছিলেন গোপাল চন্দ্র দত্ত 1881 সালের মে মাসের 30 তারিখে এবং এই চিঠিটা স্টেটসম্যান পত্রিকা ছাপা হয়েছিল পয়লা জুন 1881 সালে এই চিঠিটি হুবহু তুলে দিলাম "ভবানিপুর, কাসারিপাড়ায়, দক্ষিণ শহরতলির পৌরসভার অধীনে ধনী পরিবার গুলির মালিকানাধীন বেশ কয়েকটি ল্যাট্রিন রয়েছে.. বিষয়বস্তু (যার) কাছাকাছি একটি ট্যাঙ্কে অবাধে প্রবাহিত হতে দেওয়া হয়, যার জল দরিদ্র লোকেরা রান্নার জন্য ব্যবহার করে এবং অন্যান্য গার্হস্থ্য উদ্দেশ্যে...এখন, সম্পাদক সাহেব, আপনি ভবানীপুরের কাসারীপাড়ার দরিদ্রদের একটি স্থায়ী সুবিধা প্রদান করবেন, যারা আদালত থেকে প্রতিকার পাওয়ার মতো ভাগ্যবান হয়নি, যদি আপনি তাদের পক্ষে আপনার শক্তিশালী কণ্ঠস্বর উত্থাপন করেন। এমন একটি কণ্ঠস্বর যা প্রায়শই সফলভাবে দুঃখ থেকে মুক্তির জন্য উত্থাপিত হয়েছে এবং তাই তাদের দুঃখকষ্টের ফলপ্রসূ উৎস থেকে মুক্তি দিয়েছে" এই কাঁসাইপাড়ার কথা কেন বলছি, কারণ এখানে থাকতেন পরমেশ্বরনয় থাঙ্কাপ্পান নায়ার ওরফে P. K. Nair. কলকাতার ইতিহাসবিদদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম, কাঁসারি পাড়া লোকেরা তাকে চেনে নায়ার বাবু হিসাবে। ইনি কলকাতার ইতিহাসের বিশেষ করে 17 থেকে 19
![]() |
| P.K. Nair তার কলকাতার ঘরে |
শতকে মানুষ কাছে তুলে ধরেছেন তার বিভিন্ন বইয়ের মাধ্যমে। অনেক মনে করেন তিনি কলকাতা কে আর্কাইভ করেছিলেন তার বই গুলিতে। 1955 সালে এর্নাকুলাম থেকে তিনি যখন হাওড়া স্টেশন নেমেছিলেন তখন তিনি একজন নিঃস্ব যুবক, কলকাতা তিনি এসেছিলেন উচ্চশিক্ষা ও চাকরি জন্য, তিনি বেসরকারি চাকরির মাধ্যমে নিজের পেশাগত জীবনে পা রাখেন, এর তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন টাইপিস্ট হিসেবে। এরপর তিনি বিভিন্ন সংবাদপত্রে চাকরি করেন শুধু তাই নয় তিনি সরকারি চাকরি ও পেয়েছিল কিন্তু ততদিনে কলকাতার প্রেমে পড়ে গেছেন, সরকারি চাকরি করলে তাঁকে কলকাতা ছাড়তে হবে কিন্তু সেই তিনি করতে পারবেন না কলকাতা তো তার বাড়ি তাই আর তিনি সরকারি চাকরি করলেন না। কলকাতার ইতিহাস নিয়ে কাজ আরম্ভ করলেন, প্রকাশরা খুব কম টাকাই দিতেন। কিন্তু তার তাতেই হবে বেছে নিলেন দরিদ্র জীবন কে। হঠাৎ হঠাৎ করেই বেরিয়ে পরতেন এগারো সম্বল করে, মানে পায় হেঁটে ঘুরে বেড়াতেন কলকাতার আনাচে কানাচে আর তার বিভিন্ন বইয়ের মাধ্যমে তুলে ধরতে কলকাতার ইতিহাস। কলকাতায় যে এতো রাস্তা, গলি তাদের নাম আগে কী নাম ছিল ? এখন কী নাম হয়েছে তার বইতে সব তুলে ধরা আছে। তার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু ছিল প্রাচীন রেমিংটন টাইপরাইটার, এই টাইপরাইটার মাধ্যমে উঠে এসেছে তার বইগুলি। তার দুই কামরার ছোট ঘরে ভরা ছিল বই দিয়ে, তার বাড়িতে না ছিল কম্পিউটার আর না ছিল ফোন ও। তার সংগ্রহে অনেক দুষ্প্রাপ্য বই আছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বাস্টিডের সই করা ইকোজ ফ্রম ওল্ড ক্যালকাটা, ক্যালকাটা গেজেট এরকম আরো বই। তার স্ত্রী করলে স্কুলে চাকরি করে ছেলেমেয়েদের সামলাচ্ছেন আর উনি কলকাতা কে নিয়ে পায়ে হেঁটে করে চলেছেন রিসার্চ। কখনো কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরী তে ঘাঁটছেন পুরোনো নথিপত্র। তাঁর লেখা মোট ষাঠ টি বই রয়েছে, সবকটি অবশ্যই ইংরেজিতে। কিন্তু তাকে তার বাড়ি কলকাতা কে ছাড়ে যেতে হয়েছিল, 1999 সালে যখন তাঁর ছোট ছেলে মারা যায়। কিন্তু কলকাতা পুরোপুরি বিদায় জানাতে পারেন নি নায়ার বাবু আবার ফিরে আসেন কলকাতায় কিন্তু শেষমেশ 2018 সালে কলকাতা কে বিদায় জানান তিনি। তারা অনেক বছর আগের এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন he was happy to be whatever people thought he was. He wasn’t really concerned about labels, or about the criticism of his relatively pedestrian Bengali. কলকাতা এখনো ভুলবে নায়ার বাবু কে।
ছবি সূত্র - internet
তথ্য সূত্র - A Histary of Calcutta's Streetas P.K. Nair
Times Of India
Indian Express
আনন্দবাজার পত্রিকা
- Get link
- X
- Other Apps


Comments