- Get link
- X
- Other Apps
Posted by
Tiki liki
on
- Get link
- X
- Other Apps
![]() |
| আউটরাম ঘাট |
আগের সপ্তাহে কলকাতার একটি ঘাট মানে গঙ্গার নদীর একটি ঘাটের কথা বলেছিলাম। এও বলেছিলাম কলকাতার বুকে অনেক ঘাট রয়েছে। আজকে আরো এক ঘাটের কথা বলবো যা এক ব্রিটিশ সাহেবের নামে পরিচিত। বাবু ঘাটের দক্ষিণে এই ঘাটের অবস্থান, আশা করি বুঝতে পেরেছেন কোন ঘাটের কথা বলছি, হ্যাঁ ঠিক ধরছেন আউটরাম ঘাট। জানা যায় রেঙ্গুন থেকে এই ঘাটে জাহাজ থামাতো আবার এই ঘাট থেকেই রেঙ্গুনের উদ্দেশ্যে জাহাজ ছাড়াত। ব্রিটিশরা আউটরাম কে খুব শ্রদ্ধা করেন আর সেই জন্য এই গঙ্গার ঘাটের নামকরণ করা হয় ঐ সাহেবের নামে। General Sir James Outram এর জন্ম হয় 1803 সালে স্কটল্যান্ডে জানুয়ারি মাসের 29 তারিখে। আউটরাম সাহেব স্কটল্যান্ডের অ্যাবারডিন শহরের ম্যারিচ্যেল কলেজ থেকে পাস করে ষোল বছর বয়সে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
![]() |
| জেমস আউটরাম |
প্রথমে মানে 1820 সালে তিনি তৎকালীন বোম্বাই রেজিমেন্টের অস্থায়ি অ্যাডুজান্টান হন, এর 1822 সালে তিনি খুব ভালো শিকারি হয়ে ওঠেন, শোনা যায় তিনি হিংস্র জানোয়ারেদের মানে বাঘ ভাল্লুক এদের শিকার করতেন। আউটরাম সাহেব কয়েক বছর খান্দেশে ছিলেন, এবং সেই সময়ে দুর্ধর্ষ ভিলদের দমন করেন এক বাহিনী গঠন করে। 1835 থেকে 1838 সাল পর্যন্ত তিনি গুজরাট ছিলেন এবং তখন গুজরাটের বিদ্রোহী সর্দারদের আয়ত্ত আনেন। এরপর তিনি পলিটিক্যাল এজেন্ট হন। 1838 সালে আবার বোম্বাই রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন হন এবং সৈন্যদল কে নেতৃত্ব দিয়ে কান্দাহার ও গজনীর মধ্যে দিয়ে সেনাবাহিনী কে কাবুলে নিয়ে পৌঁছান। আউটরাম সাহেব সেই সময় স্যার জন কেন এর স্টাফ হিসেবে যুক্ত ছিলেন এবং সেই সময় তিনি কাবুল থেকে দোস্ত মহম্মদ এর পিছুনিয়ে তাঁকে হিন্দুকুশ পর্বতের ঐ পারে তাড়িয়ে ছারেন বলে শোনা যায়। শোনা যায় দক্ষিণ আফগানিস্তানের যুদ্ধে আউটরাম সাহেব বিশেষ সাহসীকতার পরিচয় দেন। ওই একই বছরে মানে 1839 সালে আউটরাম সাহেব হায়দ্রাবাদের পলিটিকাল এজেন্ট নির্বাচিত হন। 1843 সালের ফেব্রুয়ারি মাসের দুই তারিখে প্রচন্ড লড়াইয়ের মাধ্যমে হায়দ্রাবাদের রেসিডেন্সিকে রক্ষা করেন। এরপরেই আউটরাম সাহেব লেফটেন্যান্ট কর্নেল হন এবং C.B. উপাধি পান। 1845 সালে আউটরাম সাহেব সাঁতারায় ছিলেন এবং 1847 সালে বরোদায় থাকাকালীন তিনি উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারাদের দূর্নীতি এবং ঘুষ নেওয়া ধরিয়ে দিয়েছিলেন, সেই জন্য বোম্বাই গভর্নমেন্ট তাকে সেই পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু লর্ড ডালহৌসি তাকে সেই পদ আবার বহাল করে। আউটরাম সাহবের সহযোগে ব্রিটিশরা অযধ্যা অধিগ্রহণ করে, 1854 সালে আউটরাম সাহেব লক্ষনৌর রেসিডেন্ট নিযুক্ত করা হয়। পারস্য যুদ্ধের প্রধান সেনাপতি ছিলেন এই আউটরাম সাহেব, যুদ্ধ শেষে তাকে উপাধি দেওয়া হয়েছিলো। মহাবিদ্রোহের সময় 1857 সালে আউটরাম সাহেব বেঙ্গল ডিভিশন সাথে আরো একটি ডিভিসন পরিচালনা করেন। 1857 সালে লক্ষনৌ যখন বিদ্রোহী সেনাদের দ্বারা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে ছিল, সেই সময় তিনি লক্ষনৌকে অবরুদ্ধ থেকে মুক্ত করার জন্য সেনাবাহিনী পাঠান অবশ্য তিনি তখন সেই সেনাবাহিনী কে নেতৃত্ব দেন নি। তার বদলে তিনি স্যার হেনরি হেভলক কে সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এবং তিনি একজন সাধারণ সৈনিক হিসেবে সেনাবাহিনী তে ছিলেন। হয়তো তিনি বুঝতে চেয়েছিলেন কীভাবে শত্রুপক্ষকে ধরাসাই করা যায়। কারণ পরে তিনি আবার সেনাবাহিনীর সেনানায়ক হয়ে নেতৃত্ব দেন। আর দ্বিতীয়বার অযধ্যার চিফ কমিশনার পদে নিযুক্ত হন। ওই একই বছর নভেম্বর মাসে পুনরায় লক্ষনৌ বিদ্রোহী সেনাদের দ্বারা অবরুদ্ধ হয়। আউটরাম সাহেব আবার সেনাবাহিনী পাঠায় লক্ষনৌ কে মুক্ত করার জন্য এবার তিনি আলামবাগে আশ্রয়নেয়, 1858 সালের মার্চ মাস অবধি আউটরাম সাহেব আলামবাগকে রক্ষা করে এবং একলাখ কুড়ি হাজার বিদ্রোহী সেনাদের থেকে লক্ষনৌ কে পুনরুদ্ধার করেন। 1860 সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টের সাময়িক সদস্য ছিলেন। তাকে বিভিন্ন পদ এবং উপাধিতে ভূষিত করা হয়, তাকে নাইট উপাধি দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল ছিলেন এবং 1863 সালের মার্চ মাসের তিন তারিখে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন, তাকে ওয়েস্টমিনস্টার এবিতে তাকে সমাধিস্থ করা হয়।
![]() |
| আউটরামের মূর্তি |
কলকাতায় এবং লন্ডনে আউটরাম সাহবের বোঞ্চ মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল। একটা পার্ক স্ট্রিট আর অন্যটা চৌরঙ্গি মোড় স্থাপন করা হয় কিন্তু চৌরঙ্গি মোড় এখন যেই মূর্তিটি দেখা যায় সেটি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর, কিন্তু জানেন এই মূর্তিটি সঙ্গে হুবহু মিল রয়েছে আউটরাম সাহবের মূর্তিটির। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে কী মিল তাহলে বলি 1874 সালের মে মাসের তেইস তারিখ আউটরাম সাহবের বোঞ্চ মূর্তি এখানে বসানো হয়েছিল,1947 সালে স্বাধীনতা পেল ভারতবর্ষ।
![]() |
এরপর 1958 সালে এখানে মহাত্মা গান্ধীর মূর্তি বসানো হয়। কিন্তু 1969 সালে এক মারাঠি ভাষ্কর্য নাম নাগেশ যোগলেকার এখন যেই মূর্তিটি আমার দেখেথাকি সেটা তৈরি করেছিলেন, আর আউটরাম সাহবের মূর্তিটির সঙ্গে মিল এই যে উনি পুরো মূর্তি নকল করেন খালি আউটরাম যায়াগায় নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু। এই ভাবে এখনো আউটরাম সাহেব কে মনে রেখেছে কলকাতা।
তথ্য সূত্র - রাধারমণ মিত্রের কলিকাতা দর্পণ
কৃতজ্ঞতা স্বীকার - শ্রী দেবরাজ গোস্বামী এবং Feluda Followers
- Get link
- X
- Other Apps




Comments