কি করে নাম হলো এসপ্ল্যান্ড ?

এসপ্ল্যান্ড 

 আমাদের প্রাণের শহর কলকাতা। আর এই কলকাতার সবচেয়ে ব্যাস্ততম রাস্তা হলো এসপ্ল্যান্ড। এই এসপ্ল্যান্ড কথার অর্থ হলো একটি উন্মুক্ত দীর্ঘ এবং সমতল এলাকা, সাধারণত এই এলাকটি সমুদ্রের পাশে অবস্থিত যেখানে লোকেরা আনন্দের জন্য হাঁটতে পারে। কিন্তু আমাদের কলকাতার এসপ্ল্যান্ড এলাকায় টি এসপ্ল্যান্ড কথার সম্পর্নু উল্টো মানে করে, অবশ্য হুগলি নদী এই এলাকাটির খুব কাছেই। ব্রিটিশ আমলের কলকাতায় এসপ্ল্যান্ডের পশ্চিম দিকে যে রাস্তা চলে গেছে তাকে বল হতো চাঁদপাল ঘাট কা সামান রাস্তা। আর এই রাস্তার উত্তর দিকে চলে গেছে ধুরমোতল্লা কা রাস্তা এই কথা টি জানা যায় 1850 সালের ওল্ড ক্যালকাটা ডিকসেনারি থেকে। এখনকার এসপ্ল্যান্ড যায়গাটি আগের ময়দানের অন্তর্ভুক্ত ছিল এখানে জঙ্গলে ভরা ছিল। যেই সময়ের কথা বলছি তখন পলাশির যুদ্ধ হয়নি। 1757 সালে পলাশীর যুদ্ধের পর, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা কে হারিয়ে কলকাতায় নতুন ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ নির্মাণের কাজ শুরু হয় 1758 সালে। তখন তো বাংলার গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস। হেস্টিংস সাহেব দেখেছিলেন এখানে সাহেবদের হাঁটার জন্য আলাদা কোনো রাস্তা নেই। তাই তিনি ঠিক করেছিলেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জনগণ ও ইউরোপীয় সাহেবের হাঁটার জন্য আলাদা একটি রাস্তার নির্মাণ করেন, সেই রাস্তাটি হলো এসপ্ল্যান্ড। P. Thankappan Nair তার বই A History of Calcutta's Street উল্লেখ করেছেন ব্রিটিশ আমলে হেস্টিংস সাহেবের সময় এসপ্ল্যান্ড ছিল " 'elegant walking parties' on moonlight evenings". এরপর বছর গড়াতে থাকে কলকাতায় মানুষের সংখ্যা ও বাড়তে থাকে আর ধীরে ধীরে অনেক জঙ্গল রাস্তায় পরিণত হয়। 1780 সালে মিস সোফিয়া গোল্ডবোর্ন বলেছেন এসপ্ল্যান্ড সাথে যুক্ত হয় শহরের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। তিনি উল্লেখ করেছেন ময়দানের দক্ষিণদিকে অনেক টা অংশে জঙ্গলে ভরা ছিল। মাঝে মাঝে জনৈক ওয়াটসন তাদের কে মাঝে মাঝে লঞ্চ দেখাতে নিয়ে যেত, ইনি খিদিরপুর কাজ করতেন। 1800 সালে এসপ্ল্যান্ড কে দুভাগে ভাগ করা হয় একটি হলো এসপ্ল্যান্ড রো ওয়েস্ট আর একটা হলো এসপ্ল্যান্ড রো ইস্ট। এসপ্ল্যান্ড শুধু মাত্র রাস্তা তো নয়! কলকাতার এসপ্ল্যান্ড এলাকায় আছে অনেক কিছু, আজকে শুধু মাত্র রাস্তার গল্প টা বললাম। বাকিটা আসবে আস্তে আস্তে ....


ছবি সূত্র - internet

তথ্য সূত্র - A History of Calcutta's Streets  

P. Thankappan Nair

Comments