- Get link
- X
- Other Apps
Posted by
Tiki liki
on
- Get link
- X
- Other Apps
![]() |
| যাদের জন্য তৈরি হয় |
ভারতের ক্রিকেট দল এইবার অষ্টমবারের জন্য এশিয়া কাপ জিতেছে এবার লক্ষ্য বিশ্বকাপ। আর এই বারের বিশ্বকাপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এবারের বিশ্বকাপ আয়োজন করেছে ভারত। গতবার বিশ্বকাপ জিতে ছিলো ইংল্যান্ড, আর ভারত জিতেছিল 2011 সালে তাই এই বছর তো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের মধ্যে অনেক মাঠ আছে, আর তার মধ্যে অন্যতম হলো আমাদের কলকাতার ইডেন গার্ডেন। আজকে গল্প এই মাঠ অর্থাৎ ইডেন গার্ডেন কে নিয়েই। ভারতের অন্যতম স্টেডিয়াম হলো আমাদের কলকাতার ইডেন গার্ডেন। ইডেন গার্ডেন কে তো 'ক্রিকেটর মক্কা' বলা হয়। ইডেন গার্ডেন স্টেডিয়ামটি ভারতের দ্বিতীয় ও পৃথিবীতে তৃতীয় বৃহত্তম ক্রিকেট মাঠ হলো এই ইডেন গার্ডেন। বর্তমান সময়ে ইডেন গার্ডেনে দর্কশ আসন সংখ্যা আটষট্টি হাজারের বেশি।
আচ্ছা লক্ষ্য করে দেখেছেন আমরা কিন্তু ইডেন স্টেডিয়াম বলি না বলি কিন্তু ইডেন গার্ডেন। তাহলে এই বাগান কী করে হয় উঠলো স্টেডিয়াম। সালটি ছিল 1836, ভারতে তখন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি রাজত্ব চলছে কলকাতার চাঁদপাল ঘাটে এসে ভিড়লো ব্রিটিশ জাহাজ। ঐ জাহাজ ছিল নতুন গর্ভনর জেনারেল এর, ভারতে নতুন গর্ভনর জেনারেল হয়ে আসলেন র্জজ ইডেন।
![]() |
| লর্ড অকল্যান্ড |
অবশ্য তার আসল নাম কেউ মনে রাখেনি তার ভারীভরকম পদবী অর্থাৎ ফার্স্ট আর্ল অব অকল্যান্ড এর জন্য, তিনি পরিচিত ছিলেন লর্ড অকল্যান্ড হিসাবে। এখানে বলে রাখা দরকার, সেই সময় যে সকল ব্রিটিশ কর্মচারীরা ইংল্যান্ড থেকে কলকাতায় আসতেন তাদের জাহাজ নোঙর করতো চাঁদপাল ঘাটেই। এলিজা ইম্পে এই ঘাটেই নেমেছিলেন। এই ঘাটের কাছে চন্দ্র পাল নামে একজনের মুদিখানার দোকান ছিল ওখানে, নৌকার মাঝি মল্লারা ঐ দোকান বিশ্রাম নিতে ও খাওয়া দাওয়া করতো, তাই বলা হয়ে থাকে চন্দ্র পাল নামেই ঐ ঘাটের নাম হয় চাঁদপাল ঘাট। হ্যাঁ আবার লর্ড অকল্যান্ড ফিরে আসা যাক, জানা যায় অকল্যান্ড সাহেব সাথে তার দুই বোন এমিলি এবং ফ্যানি ইডেন কলকাতায় এসেছিলেন। কিন্তু কলকাতায় এসে তারা খুব সমস্যায় পড়েন।
![]() |
| এমিলি এবং ফ্যানি ইডেন |
ইংল্যান্ডের আবহাওয়ার সঙ্গে কলকাতার আবহাওয়ার কোনো মিল নেই, বরং প্রায় উল্টো কলকাতার গরম আবহাওয়ায় তাদের খুব অসুবিধা হতো। জানা যায় ব্যারাকপুরের গর্ভনর হাউসে তারা বেশিরভাগ সময় কাটাতেন। ওখানে অনেক পশু পাখি পুষে ছিলেন তাছাড়া গর্ভনর হাউসে তারা বাগান তৈরি করেছিলেন। ব্যারাকপুরে থাকাকালীন এমিলি ইডেন একটি চিঠি লিখেছিলেন Rev. রর্বাট ইডেন কে, সেই চিঠিটাই হুবহু তুলে ধরলাম।
Letter of Emily Eden to Rev. Robert Eden, July 17, 1837
The dawk, as the ignorant creturs call the post, comes in about half-past one at Barrackpore; so about that time I established myself and book in his Excellency’s room while he was writing, and kept an eye on the door; and when the nazir, George’s head servant and a thorough picture of ‘a gentle Hindu,’ came in with a placid smile on his good-looking countenance, I guessed he had something better to give than a common official box. Then there was the fun of breaking open Grindlay’s large packages, and sorting the contents, and distributing them about the house; and, as luncheon was announced, I would not open any of my letters but kept them till I could return to my own room and enjoy them at my leisure.184
184 Miss Eden To The Hon. And Rev. Robert Eden, Barrackpore, July 17, 1837, LFI, 66- 67. Italics in original.
লর্ড অকল্যান্ড তৎকালীন কলকাতা নিজের দুই বোনের উদশ্যে একটি বাগান তৈরির পরিকল্পনা করেন। জানা যায় দুই বোনের বাগানে সন্ধ্যা ভ্রমণের অভ্যাস ছিলো, আর তখন কলকাতায় সেই রকম কোনো বাগান ছিলো না, আর কতদিন ব্যারাকপুরে বোনদের রাখবেন, তারা বিশন্ন হয়ে পড়েছিল তাই এই বাগান তৈরির ভাবনা। কিন্তু বাগানের জন্য জমি কোথায় পাওয়া যায় ? অবশেষে পেলেন একটা জমি নতুন ফোর্ট উইলিয়াম ও ময়দানের কাছে ওদিকে হুগলি নদী বা গাঙ্গা খুব দুরে নয়, বাগানে ঘুরতে ঘুরতে নদীর হাওয়া উপভোগ করা যাবে। জানা যায় 1840 সালে যায়গাটি পেয়েছিলেন অকল্যান্ড সাহেব, তখন যায়গাটি ছিল জঙ্গলে ভরা আর ডাকাতে উপদ্রব ছিলো। এখন কথা হলো যায়গাটি পেলেন কীভাবে অনেকে বলেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যায়গাটি দিয়েছিলো অকল্যান্ড সাহেব কে। কিন্তু পূর্নেন্দু পাত্রি দুটো সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেছেন। এক রানী রাসমণি স্বামী বাবু রাজচন্দ্র দাস আর দুই নবাব মীরজাফর দান করেছিলেন এই জমিটি। তবে মীরজাফর দান করেছিলেন কী না এই নিয়ে কিছু জানা যায় নি, বাবু রাজচন্দ্র দাস যার নামে বাবু ঘাট তাকে নিয়ে একটা গল্প শোনা যায়, বাবু রাজচন্দ্র দাসের তৃতীয় কন্যা খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, তাকে সুস্থ করে দিয়েছিলেন অকল্যান্ড সাহেব নিজশ্ব ডাক্তার। তাই বাবু রাজচন্দ্র দাস ঐ জমিটি অকল্যান্ড সাহেব কে উপহার দেয়। অনুমান করাই যে তিনি, জমিটি পেয়ে খুশি হয়েছিলেন এবং তার দুই বোন খুশি হয়ে ছিলেন, শুরু কলকাতার বুকে একটি বাগান তৈরির পরিকল্পনা। অকল্যান্ড চেয়েছিলেন এই বাগানে হবে স্বর্গের বাগানের মতো, বাগানে থাকবে একটি হ্রদ, একটি ঝর্না, কয়েকটি সারিবধ্য গাছ আর তার নিচে দিয়ে সুন্দর খড়ি যুক্ত হাঁটার রাস্তা, আর থাকবে ব্যান্ড স্ট্যান্ড।
![]() |
| সেই ছোট্ট হ্রদ |
এই বাগান তৈরির দায়িত্ব অকল্যান্ড সাহেব দিয়েছিলো ক্যাপ্টেন ফিটজারল্যান্ড উপর। জানা যায় এই বাগানে নৌকা করে বেড়ানোর ব্যাবস্থা ছিলো। ব্যান্ড স্ট্যান্ডে, রোজ ব্যান্ড বাজতো। তখন এই বাগান সাহেবদের প্রমদ্যান হয়ে উঠে ছিল। আগে এই বাগানের নাম কিন্তু ইডেন গার্ডেন ছিলো না, এই বাগান নাম ছিল অকল্যান্ড পার্ক বা অকল্যান্ড সার্কাস গার্ডেন। নাম পাল্টানোর পিছনে কারণ রয়েছে, সেইটা হলো 1839 সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ষোলো হাজার সৈন্য নিয়ে হামলা চালায় আফগানিস্তানের উপর।
![]() |
| ব্যান্ড স্ট্যান্ড |
কিন্তু তখন মধ্য এশিয়া জুড়ে চলছে, The Great Game. সেই সময় রাশিয়া ও ইংল্যান্ড নিজের সাম্রজ্য বিস্তার নিয়ে ব্যাস্ত, এই রকম অবস্থায় আফগানিস্তান ছিল দুই দেশের মাঝখানে। কে আগে সাম্রজ্য বিস্তার করবে আফগানিস্তানের উপর। দুই দেশের গুপ্তচর দুই দেশ কে খবর পাঠাচ্ছে। ব্রিটিশ গুপ্তচর আলেকজান্ডার বার্নাস কলকাতায় বড়লাট কে চিঠি পাঠিয়ে জানায় যে যুদ্ধের কোনো দরকার নেই দোস্ত মোহাম্মদ তাদের দলেই, কে কার কথা শোনে হলো যুদ্ধ। আর হারলো ব্রিটিশরা, এর ফলে লর্ড অকল্যান্ড কে ইংল্যান্ডে ফেরত আসতে হলো, সেই জন্য তার প্রিয় বাগান কে উপভোগ করতে পারেনি অকল্যান্ড সাহেব।
![]() |
| The Remnants of an army byElizabeth Thomson painting |
আর সেই জন্য হয়তো ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নাম ও পাল্টে দিয়েছিলো বাগানের। কিন্তু 1857 পর ক্ষমতা যখন ইংল্যান্ডের রাণীর হাতে যায় তিনি বাগানের নাম ইডেন রাখেন, অনেক বলেন এই বাগানের সাথে স্বর্গের বাগানের মিল রয়েছে তাই এই নাম। আবার স্থানীয় লোকজন এই বাগান টিকে বলতো লেডি বাগান।
![]() |
| পুরোনো কলকাতার map এ ইডেন গার্ডেন |
জানা যায় কলকাতা যখন তেমন ভাবে বিজলী বাতি ছিল না, তখন এই ইডেন গার্ডেনে বিজলী বাতি ছিল। দ্যা স্টেটসম্যানে 1890 সালের মার্চ মাসের 27 তারিখে একটি খবরে জানানো হয়েছে স্টীম ইঞ্জিন ঠিক করার জন্য ইডেন গার্ডেনে 1 এপ্রিল থেকে 6 এপ্রিল পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকবে না। আর কলকাতায় প্রথম বিজলী বাতি বসেছিল 1889 সালে। ইডেন গার্ডেন কিন্তু সবসময় নেটিভরাত ঢুকতে পারতেন না। ইডেন গার্ডেন ঢোকার জন্য আলাদা ড্রেস কোড ছিল, এবং এই নিয়ম অনেকদিন চালু ছিলো। একটি ঘটনার মাধ্যমে এই খবরটা জানা যায় দ্যা স্টেটসম্যানে 1882 সালে মার্চ মাসের 22 তারিখে একটি খবর প্রকাশিত হয়, একজন বাঙালি বাবু তৎকালীন পুলিশ কমিশনার হ্যারিসন সাহেবর দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য লিখেছেন যে তাকে এক পুলিশ কর্মী ইডেন গার্ডেন ঢুকতে দেয় না এবং অপমান করে তাড়িয়ে দেয় আর কারণ তারা "National Dress" এ ছিল, মানে ধুতি পাঞ্জাবি পরে ছিল। 1880 সাল থেকে নাকি ইডেন গার্ডেনে ঢোকার জন্য আলাদা মূল্য ছিলো, ব্রিটিশরাও নাকি সেই মূল্য দিতো যখন ইডেন গার্ডেন যেত। কিন্তু একদিন এর বিরোধিতা করেন ব্রিটিশ গন্যমান্য ব্যক্তি সেটন কার। তার দাবি ছিল এই সম্পত্তি ব্রিটিশদের তার কেন ঢোকার জন্য টাকা দেবেন ! তার পর থেকে প্রেবশ মূল্য নেওয়া বন্ধ হয় কিন্তু, নেটিভ থেকে নিশ্চয় প্রবেশ মূল্য নেওয়া বন্ধ হয়নি।
![]() |
| লর্ড ডালহৌসি |
ইডেন গার্ডেন একটা একটা প্যাগোডা আছে, এই প্যাগোডা এনেছিলেন গভর্নর জেনারেল লর্ড ডালহৌসি। ঘটনা বা গল্পটা এইরকম 1853 সালে দ্বিতীয় ইং বর্মা ( মায়ানমার ) যুদ্ধ চলছিল, সেই বর্মার পাই ( Pye ) শহর পরিদর্শন করেন ডালহৌসি তখন তার এই প্যাগোডাটি পছন্দ হয়, আর ঠিক করেন কলকাতা নিয়ে গিয়ে স্থাপন করবেন। ঐ প্যাগোডাটি তৈরি করেছিলেন, মং নামের একজন শিল্পী।
![]() |
| সেই প্যাগোডা |
![]() |
| এখন সেই প্যাগোডা |
এই প্যাগোডা টি তিন মাসের মধ্যে, তৈরি করিয়েছিলেন ঐ শহরের গর্ভনরের স্ত্রী মং হনেন। আর খরচ পরেছিল 1,500 টাকা। ডালহৌসি ওর্ডার করলেন এই প্যাগোডাটি কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার, HMS Sawaraganga নামের একটি জাহাজে 1854 থেকে 1856 সালে এক এক করে প্যাগোডাটার অংশ কলকাতা নিয়ে আসা হয়। 1825 এখানে ক্যালকাটা ক্রিকেট ক্লাব ক্রিকেট খেলার আয়োজন করে আর 1868 সালে ইডেন গার্ডেন স্টেডিয়ামটির গড়াপত্তন হয়।
![]() |
| ইডেন গার্ডেন স্টেডিয়াম |
আর এই গার্ডেন অনেক টা অংশ নিয়ে তৈরি হয় আকাশবাণী ভবনের ও নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়াম। আর বাকি অংশ টা ঐ দুই বোনের স্মৃতি উদ্দেশ্য রেখা দেওয়া হয়, এখন সেটি ইডেন গার্ডেন পার্ক। একদিন ঘুরে আসতেই পারেন ওখানে। আর ঐ পার্কের কিছুটা দূরে ইডেন গার্ডেন স্টেডিয়াম, বিশ্বকাপের একটি সেমিফাইনাল ও হবে ওখানে তাহলে রেডি তো !
ছবি সূত্র - internet
https://www.getbengal.com/details/eden-gardens-a-gift-of-love-for-kolkata-by-three-british-siblings
https://bangladeshletters.wordpress.com/extracts-from-emily-edens-letters/
- Get link
- X
- Other Apps











Comments