- Get link
- X
- Other Apps
Posted by
Tiki liki
on
- Get link
- X
- Other Apps
![]() |
সত্যজিৎ রায় দ্যা মাস্টার, সত্যজিৎ রায়কে বাঙালি কিংবা ভারতীয় অথবা বিশ্বে এক নামে চেনে । তিনি বাংলার গর্ব, সত্যজিৎ রায় সিনেমা যে রকম বিশ্বকে নতুনভাবে সিনেমা বানাতে শিখিয়েছে তেমনি সত্যজিৎ রায়ের বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র ফেলুদা অথবা শঙ্কু পাঠকের মন জয় করে নিয়েছে । ফেলুদা পরলে মনেই হবে যে পাঠকই হলো তোপসে আর তার এক সত্যি দাদা আছে যার নাম ফেলুদা, আবার সম্পর্কে পাঠক গিয়ে পড়বে, বিজ্ঞানের এক অপূর্ব জগতে সেই জন্যেই প্রথমে বললাম দ্যা মাস্টার । দুদি বাদেই সত্যিই সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন,
2 মে । এই দিনটি সবার মনে থাকে কারণ এই দিনেই তো জন্মেছিলেন দ্যা মাস্টার । সত্যজিৎ রায় 1,500 বেশি ইলাস্ট্রেশন, সিনেমা, ক্যালিগ্রাফি, সঙ্গীত পরিচালনা সবকিছুতেই ছিলেন পারদর্শী । 1992 সালে 64 তম অস্কারে অনুষ্ঠানে সত্যজিৎ রায় কে অস্কার দেওয়া হয় lifetime achievement for flim making এর জন্য, বলে রাখা ভালো এই পুরস্কার টা একমাত্র সত্যজিৎ রায় ছাড়া আর কেউ পায়নি। সত্যজিৎ রায়ের ঠাকুরদা ছিলেন উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, আর বাবা সুকুমার রায় । তবে সত্যজিৎ খুব কমদিন বাবা স্নেহ পেয়েছেন, সত্যজিৎ এর বয়স তখন মাত্র তিন সেই সময় পৃথিবী ত্যাগ করলেন সুকুমার রায় । সত্যজিৎ নিজেই বলেছেন তার আত্মজীবনী "যখন ছোট ছিলাম" 1982 সালে প্রকাশিত হয়,
'বাবা অসুখে পড়েন আমি জন্মাবার কিছুদিনের মধ্যেই। এ অসুখ আর সারেনি, তবে মাঝে মাঝে একটু, সুস্থ বোধ করলে বাবাকে বাইরে চেঞ্জে নিয়ে যাওয়া হত। বাবার সঙ্গেই আমি গিয়েছিলাম একবার সোদপুরে আর একবার গিরিডি । গঙ্গার উপর সোদপুরের বাড়ির উঠোনটা আছে। একদিন বাবা ছবি আঁকছেন ঘরে জানালার ধারে বসে, এমন সময় হঠাৎ বললেন, 'জাহাজ যাচ্ছে। আমি দৌড়ে উঠোনে বেরিয়ে এসে দেখলাম ভোঁ বাজিয়ে একটা স্টীমার চলে গেল ।
![]() |
| বিনোদবিহারী মুখার্জির সঙ্গে সত্যজিৎ রায় |
শান্তিনিকেতন পড়াশোনা করার সুবাদে, তার সঙ্গে আলাপ হয় নন্দলাল বসু বিনোদবিহারী মুখার্জির সঙ্গে । সত্যজিৎ রায় বিনোদবিহারী বাবুকে নিয়ে একটা তথ্য চিত্র বানিয়েছিলেন, 1972 সালে সত্যজিৎ রায় তৈরি করেন শান্তিনিকেতনের শিল্পী দৃষ্টিশক্তিহীন গুরু বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায় কে নিয়ে 'ইনার আই' । সত্যজিৎ রায়ের স্কুল ছিল বালিগঞ্জ গভার্নমেন্ট হাই স্কুল, তখন সত্যজিৎ ছিলেন ভবানীপুরে, ভবানীপুরে ছিল সত্যজিৎ রায়ের মামার বাড়ি । সত্যজিৎ রায় নিজেই বলেছেন ' আমি যখন স্কুলে ভর্তি হই তখন আমার বয়স আট '
তিনি বলেছেন, ফিফথ ক্লাসে ভর্তি হন, স্কুলের মাস্টার মশাই তার পরীক্ষা নেন এবং তিনি পাশে করেই স্কুলে ভর্তি হন ।
সত্যজিৎ রায় বলেছেন তাকে কখনো তার সহপাঠীরা ভাল নামে ডাকেনি, শুধু স্কুলের মাস্টারমশাইরা তাকে ভাল নামে ডাকতেন, ডাক নাম ধরেই ডাকত সহপাঠীরা । আর কার জন্যে সহপাঠীরা তাকে ডাক নামে ডাকত সেকথাও বলছেনে সত্যজিৎ রায় । তখন 1943 সাল ব্রিটিশ বিজ্ঞাপন কোম্পানি, ডি জে কেইমারে জুনিয়র ভিসুয়ালাইজার হিসাবে যোগ দিলেন সত্যজিৎ রায় । বিজ্ঞাপনের জন্য আঁকা তো চলতই, তার সঙ্গে চলত বিভিন্ন ফন্টের পরীক্ষা নিরীক্ষা, কিন্তু এখানে তিনি স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারতেন না সত্যজিৎ । যেটুকু পারতেন সব ঢেলে দিতেন তার কাজে । তার ক্যালিগ্রাফির কাজ কিন্তু চলতো, তবে ব্যাক্তিগত ভাবে । এরপর প্রচ্ছদ শিল্পী হিসেবে, 1945 সালে ডি কে গুপ্ত সিগনেট প্রেসে নিযুক্ত হয়েছিলেন সত্যজিৎ রায় । এখানে তিনি প্রথম বাংলা সাহিত্যের সাথে নতুন করে পরিচয় ঘটে, সত্যজিৎ রায়ের । এই সময়ে কাজের সুবাদে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথের পাঁচালী কিশোর সংস্করণ 'আম আঁটি ভেঁপু' এরপর তো সবাই জানে কি হয়েছিল, যা কিনা, বিশ্ব সিনেমার ইতিহাসে অন্যতম মাইল ফলক । সত্যজিৎ রায় কিন্তু নিজের ফন্ট আবিষ্কার করেছেন, ফন্ট আসলে কি সেই ব্যাপারটা একটু জেনে নেওয়া দরকার, তারপর সত্যজিৎ রায়ের ফন্টের কথা বলবো ।
![]() |
| সত্যজিৎ রায়ের আবিষ্কৃত চারটি Typeface |
এককথায় ফন্ট হলো বর্ণ বা অক্ষর, কিংবা অংকের চিহ্নের লিপিমালা মিলিয়ে তৈরি হয় ফন্ট । অক্ষরের আকৃতি ও বৈশিষ্ট্যের জন্য এই ফন্টের বিভিন্ন নামে পরিচিত হয় । ইংরেজিতে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ফন্ট হলো Time's New Roman . এছাড়া ও আছে যেমন Arial, Garamond, Bookman, Impact, Courier, Old Style, Monotipe corsiva, Helvetica ইত্যাদি । এখানে একটা জিনিস বলে রাখা ভালো সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্ট বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র ফেলুদা গোলকধাম রহস্যে Garamond ফন্ট নিয়ে একটু আলোচনা ও আছে, আসলে ফেলুদা অথবা শঙ্কু বারবার সত্যজিৎ রায়ের ছায়া ধরা দেয় । হ্যাঁ ফন্ট কথা যা বলছিলাম, প্রত্যেক ফন্টের সব ভাষার, সবকটা অক্ষরের প্রতীক থাকে এই ছিল ফন্ট । এবার আসি সত্যজিৎ রায়ের ফন্টের কথায়, ভারত ও বাংলায় ক্যালিগ্রাভের দিকটি সবার সামনে নিয়ে আসেন সত্যজিৎ রায়, তার সিনেমার পোস্টার কিংবা সন্দেশের পাতায় ছবি, কিংবা বিভিন্ন ছবি, নিজের হাতে তৈরি করতেন সত্যজিৎ । তার বিভিন্ন সিনেমার সেট ডিজাইন থেকে শুরু করে, কলা কুশলিদের সাজ - সজ্জা তিনি নিজেই করতেন । ফেলুদা, জটায়ু, তোপসে সোনার কেল্লায় কি রঙের জামা কাপড়, অথবা পাঞ্জাবি পরবে সব লেখা ও আঁকা থাকতো তার খেরোর খাতায় । নন্দন কলকাতার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র দেখে আসছি তার প্রতীক টা সত্যজিৎ রায়ের করা । সত্যজিৎ রায় মোট চারটি Typeface আবিষ্কার করেছেন, সেগুলি হলো- রে রোমান, বিজার, ডাফনিস এবং হলিডে স্ক্রিপ্ট । এখনো কিন্তু সমান ভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই Typeface গুলি । সত্যজিৎ রায় আবিষ্কৃত এই চারটি Typeface মধ্যে দুটো কিন্তু আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও পেয়েছে, সেই দুটি ফন্ট হলো রে রোমান আর বিজার । 1971 সালে একটি আন্তর্জাতিক ক্যালিগ্রাফি প্রতিযোগিতায় সত্যজিৎ রায়ের Typeface দুটি জয় লাভ করে । এই চারটি ছিল Typeface ছিল ইংরেজিতে, তবে বাংলাতেও বেশ কিছু অক্ষরেকে নতুন স্টাইল দিয়েছেন সত্যজিৎ রায়, এখন অনেক প্রকাশনি সংস্থা
" সত্যজিৎ স্টাইল " নামে অক্ষর গুলি ব্যবহার করা হয় । এখানে বলে রাখা ভালো যে Feluda Followers অন্যতম এডমিন এবং অধ্যাপক শ্রী দেবরাজ গোস্বামী একটি অসাধারণ পর্যবেক্ষণ কথা উল্লেখ করেছেন সেইটা হলো, সোনার কেল্লা ছবিতে একটি কৃষ্ণ বলরামের ছবি । অনেকের ধারণা ঐ ছবিটি যামিনী রায়ের, হ্যাঁ একশোবার যামিনী রায়ের আঁকা, কিন্তু ফেলুদার বসার ঘরে ছবিটা আসলে সত্যজিৎ রায়ের আঁকা, ওই ছবিটায় উনিয় মানিকি রয় বলে সই করেছিলেন, আর ঐ ছবিটিতে কৃষ্ণ ও বলরামের চোখে কিন্তু মণি আছে, আসলে ফেলুদার পেশা তো গোয়েন্দাগিরি । গোয়েন্দা তো আর চোখ বুঝে থাকতে পারে না, সেই কথাটি বলে ছবিটি ।
![]() |
| সেই ছবি , ছবি সূত্র - শ্রী দেবরাজ গোস্বামী © |
সত্যজিৎ রায়ের ছোট বেলার কিছু কথা আগেই তুলে ধরেছি কিছুটা, আরো কিছু টা এখন বলবো, সত্যজিৎ বলছেন তার ছোট বেলায় বড়দিন কথা, তখন কলকাতায় ছিল সাহেবদের ডিপার্টমেন্টাল স্টোর । তার নাম ছিল হোয়াইটআওয়ে লেইডল । বড়দিনে হোয়াইটআওয়ে লেইডল হয়ে উঠতো টয়ল্যান্ড , সেখানেই গেছিল ছোট্ট সত্যজিৎ রায় তার মায়ের সঙ্গে ।
![]() |
| হোয়াইটআওয়ে লেইডল এখানেই ছিল |
ওখানেই তিনি প্রথম লিফটে এ চড়েছেন । ক্রেতা ও ছিলেন সাহেব কিংবা মেম, ওখানেই তিনি প্রথম দেখেছিলেন হরেক রকম খেলনা, তাদের কিছু তিনি উল্লেখ করেছেন । যেমন স্টেশন সমেত খেলনা রেল গাড়ি, চীনে লন্ঠন ইত্যাদী । তবে ছোট্ট সত্যজিৎ এক বাক্স ক্রেকার । এখন সেই ঘড়ি ওয়ালাবাড়ি আছে সুরেন ব্যানার্জি রোডের মুখে । সত্যজিৎ রায়ের কথা বলতে গেলে, সেই কথা আর শেষ হবে না । তবে ভারতে আধুনিক সিনেমা কিংবা ক্যালিগ্রাফি অথবা ফন্ট শুরু করেছিলেন সত্যজিৎ রায় । তাই মহারাজা তোমারে সেলাম ।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার - শ্রী দেবরাজ গোস্বামী,
শ্রী কৌশিক মজুমদার
প্রথমে ফন্ট লিখেছিলাম আসেলে হবে Typeface,অসংখ্য ধন্যবাদ শ্রী কৌশিক মজুমদার বাবু কে ভুলটা ধরিয়ে দেওয়ার জন্য।
ছবি সূত্র - internet এবং শ্রী দেবরাজ গোস্বামী এবং Feluda Followers
তথ্য সূত্র - যখন ছোট ছিলাম, wikipedia, internet
- Get link
- X
- Other Apps





Comments