- Get link
- X
- Other Apps
Posted by
Tiki liki
on
- Get link
- X
- Other Apps
![]() |
| বাংলা ক্যালেন্ডার |
নতুন বছর আসছে, মানে বাংলার নতুন বছর আসছে । ১লা বৈশাখ বাংলা ক্যালেন্ডার এ বছরের প্রথম দিন কিন্তু, বাংলা মাসের নাম গুলো আমরা প্রায় ভুলতেই বসেছি পঁচিশে বৈশাখ আর ২২শে শ্রাবণ এই দুটো মাসের নাম ছাড়া অনেকেই হয়তো সব কটা বাংলা মাসের নাম জানে না । আসলে আমরা সবাই ইংরেজি নাম এবং তারিখ সব সময় ব্যবহার করে থাকি যার ফলে বাংলা মাসের নাম আমরা ভুলতেই বসেছি । আচ্ছা কিভাবে সৃষ্টি হল বাংলা মাসের নাম ? ইংরেজি মাসের নাম গুলো তো জানি কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে । কিন্তু বাংলা মাসের, নামের সৃষ্টি কিভাবে হয়েছে ? চৈত্র, বৈশাখ, ফাল্গুন কিভাবে নাম গুলো সৃষ্টি হয়েছে, প্রশ্ন উঠতেই পারে আজকে চেষ্টা করব বাংলার মাসে নামকরণ কিভাবে হয়েছে সেই গল্প বলার, তাহলে শুরু করা যাক !
আগে বলবো বঙ্গব্দ কিভাবে এল, বাংলা সাল কে আমার বঙ্গব্দ বলে থাকি । এককথায় বলা হয় সূর্য ওঠা ও অস্ত যাওয় অবধি দিনটিকে বলা হয় সৌরদিন, আর বাংলা পঞ্জিকা সৌরদিনকে পালন করে সেই জন্য বঙ্গাব্দ । তবে বঙ্গাব্দ নিয়ে একটু বির্তক আছে । ইতিহাসবিদরা মনে করেন বাংলা বর্ষপঞ্জি সৃষ্টি করেছিলেন সম্রাট আকবর । আবার অন্য মত হলো যে সপ্তম শতাব্দীর রাজা শশাঙ্ক । তাই বাংলা সাল কে ' সন ' হিসেবে চিহ্নিত করা হয় ।
বলা হয়ে থাকে শশাঙ্কের শাসন কাল ছিল, 594 খ্রিষ্টাব্দ, অনেকে আবার শশাঙ্কের শাসন কাল কে শকাব্দ হিসাবে, বলা হয় থাকে , তাই বিতর্ক রয়েছে । আবার আরো একটা বর্ষপঞ্জি নাম ব্রিক্রমাদিত্যের নাম অনুসারে ।
![]() |
| বিক্রমাদিত্যের ক্যালেন্ডার |
ইংরেজি ক্যালেনডার যেমন 12 টি মাস দেখা যায়, তেমনি বাংলা ক্যালেনডারে ও বারোটি মাস আছে । এই বারোটা মাস নাম হলো বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র, আশ্বিন, কার্তিক, অগ্রহায়ণ, পৌষ, মাঘ, ফাল্গুন, চৈত্র । বাংলা মাসের নামের সাথে আবার বাংলা বারের নামের মিল রয়েছে, এবং এরসাথে যোগ রয়েছে মহাকাশের গ্রহের নামের । যেমন বুধ গ্রহের সঙ্গে বুধবারের । বাংলা মাসের নামকরণ, সঙ্গে জড়িয়ে আছে জ্যোতিষশাস্ত্র ও রাশি । জ্যোতিষশাস্ত্র মত অনুযায়ী, চাঁদ পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরতে সময় নেয় সাতাশ দিন, আর এই সাতাশ দিনে বারো রাশি ও তাদের সাতাশ দিন নক্ষত্রকে অতিক্রম করে । এই সব নিয়ে পুরাণের একটি গল্প না বললেই নয় ।
দক্ষরাজ প্রজাপতি হলো ব্রহ্মার ছেলে,
দক্ষরাজ প্রজাপতি স্ত্রীর নাম হলো প্রসূতি তাদের সাতাশটি মেয়ে, সবচেয়ে ছোট মেয়ে হলো দুর্গা বা সতী।
প্রজাপতির সাতাশটি মেয়ে সঙ্গে বিয়ে হয় চাঁদের , আর একমাত্র ছোট মেয়ে দুর্গার সঙ্গে বিয়ে হয় শিবের । আগেই বলেছি নক্ষত্রের কথা, এই সাতাশটি নক্ষত্র হলো দক্ষরাজ প্রজাপতি মেয়ে,
চাঁদ কেও তার সাতাশ জন স্ত্রী কে সময় দিতে হবে, তাই চাঁদ এক এক দিন করে সাতাশ জন স্ত্রী সময় দেন, তিনদিন বিশ্রাম নেয়। এই ভাবে যে নক্ষত্ররের বাড়িতে পূর্ণীমা দেখা যায়, সেই নক্ষত্রের নাম অনুসারে হয় বাংলা মাসের নাম । মাস শুরু হয় বৈশাখ দিয়ে তাহলে দেখা যায়, যে মাসে বিশাখা নক্ষত্রে পূর্ণীমা দেখা যায়, সেই মাসের নাম হয় বৈশাখ, জেষ্ঠা নক্ষত্রে পূর্ণীমা দেখা যায় তার নাম হলো জৈষ্ঠ্য, পূর্বাশা নক্ষত্র পূর্ণীমা হলে নাম হয় আষাঢ়, শ্রাবণা নক্ষত্রে পূর্ণীমা হলে শ্রাবণ, ভাদ্রপদা নক্ষত্রে পূর্ণীমা দেখা গেলে হয় ভাদ্র, অশ্বীনী নক্ষত্রে পূর্ণীমা হলে আশ্বিন, কৃতিকা নক্ষত্রে ঐ আবার পূর্ণীম হলে হবে কার্তিক, মৃগশিরা নক্ষত্রে পূর্ণীমা হলে অগ্রাহায়ণ, পূষ্যা নক্ষত্রে পৌষ, মঘা নক্ষত্রে মাঘ, ফাল্গুনী নক্ষত্রে ফাল্গুন, আর চীত্রা নক্ষত্রে চৈত্র মাস । মনে রাখতে হবে এগুলি সব হয় বারোটি রাশি অনুযায়ী ।
একটু লক্ষ্য করে দেখবেন বাংলার অগ্রাহায়ণ মাসে নামে সঙ্গে কিন্তু সেই নক্ষত্রের নামের কোনো মিল নেই । নক্ষত্রের নাম মৃগশিরা, কিন্তু মাসের নাম অগ্রাহণ । কিন্তু কেন এই নাম ? জানা যায় যে এই সময় মানে অগ্রাহণ ফসল চাষ হয় , মানে ফসলের জন্য এই মাসটি অগ্রগন্য, সেই জন্য মাসের নাম অগ্রাহণ। আবার এই মাসের নাম অনুসারে গুজরাট এই মাসটির নাম হলো মাক্সার, তাহলে দেখাই যাচ্ছে নক্ষত্রের নাম অনুসারে মাসটির নাম হয়েছে ঠিকই, কিন্তু আমাদের বাংলায় নয়, এমনকি মহারাষ্ট্র এই মাসের নাম আগাহন । আবার অগ্রাহায়ণ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, এখন তো আমরা বৈশাখ মাসকে বছরের শুরু হিসাবে ধরি, কিন্তু প্রাচীন কালে অগ্রাহণ মাস কে প্রথম মাস ধরা হতো । কারণ হচ্ছে এই মাসের নামের অর্থ, এই অগ্রাহায়ণ এর হয়ণ শব্দের অর্থ হচ্ছে বছর, আবার অগ্রাহণ নামের একটি অর্থ নাকি শস্য । আর এই নক্ষত্রের নাম ও অগ্রাহণী । লোক বিশ্বাস অনুযায়ী অগ্রাহণী নক্ষত্রের জন্য ধান উৎপাদন হয়, সেই জন্য বৈশাখ নয়, বছর শুরুর প্রথম মাস হলো অগ্রাহায়ণ । আমাদের বাংলার বারো মাস নিয়ে গান ও রয়েছে , শুধু তাই নয় অনেক মনে করেন মাঘ বাংলা বছরের প্রথম মাস, অগ্রাহণ মাসের কথা তো আগেই বলেছি । সম্রাট আকবর পয়লা বৈশাখ চালু করেছিলেন , কারণ আকবর জমিদারের কাছ থেকে বকেয়া রাজস্ব আদায় করতেন, সেই দিন টিকে বলা হতো "পুণ্যহ" । এই দেখে আমাদের বাংলায় নবাব মুর্শীদকুলী খান বা খাঁ ও চালু করলেন বৈশাখ মাস কে, খাজনা আদায়ের জন্য ধার্য করলেন ।
![]() |
| সম্রাট আকবর |
ডা: নীহাররঞ্জন রায় মতে নবন্ন ছিল বাংলার নববর্ষ, তার মতে বৈদিক যুগে ছিল অগ্রহায়ণ মাস ছিল, বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস । আবার বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস যে, বৈশাখ মাস তার অনেক প্রমান আছে, বাংলার সাহিত্য আরো ভালো ভাবে বললে মঙ্গল কাব্য, উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, কবি মুকুন্দরামের মঙ্গল কাব্যে । অনেক গবেষকদের মতে, বাংলা মাসের নাম গুলো সৃষ্টি হয়েছে ষোড়শ মহাজনপদের সময় অনুযায়ী, আসলে একসময় বাংলা ষোলটি মহাজনপদে বিভক্ত ছিল ।
বলা হয় থাকে জ্যোর্তিবিজ্ঞানের একটি প্রাচীন গ্রন্থ আছে "সূর্যসিদ্ধন্ত" । এখানেই বাংলা মাসের নামের উল্লেখ আছে বলে জানা যায় । তবে তার অনেক আগে বারোটি মাস নামের একবারে আলাদা ছিল সেগুলি হলো,
তপঃ, তপস্যা, মধু, মাধব, শুক্স, শুচি, নভস, নবস্য, ইষ, উর্জ, সহস, এবং সহস্য । ব্যাক্তিগত ধারণা এগুলি সংস্কৃত নাম ।
ঐতিহাসিক ভাবে কেন বলাহয় যে সম্রাট আকবর সময় বাংলা ক্যালেন্ডার এসেছে ? কারণ সেই ব্যবহার করা হতো হিজরি ক্যালেন্ডার, আর এই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ফসলের সময়ে ফসল পাকছে না, সেই জন্য চাষী ও খাজনা দিতে পারছে না । তাই আকবর ঠিক করলেন নতুন ক্যালেন্ডার বানাবেন, সেই ক্যালেন্ডার বানানোর দায়িত্ব দেওয়া হলো, ফতেউল্লাহ সিরাজীর উপর ।
![]() |
| আকবরের সাথে ফতেউল্লাহ সিরাজী |
আবরের এই নতুন ক্যালেন্ডারের নাম ছিল,
তারিখ - এ - এলাহী । তবে কি আকবরের ক্যালেন্ডাই আমাদের বাংলা ক্যালেন্ডার ! না, সেটা ঠিক না । কিন্তু তারিখ - এ - এলাহীর সঙ্গে বাংলা ক্যালেন্ডারের অনেক মিল পাওয়া যায় । আকবরের ক্যালেন্ডারের মাসের নাম ছিল ফার্সি তে ।
আধুনিক বাংলা ক্যালেন্ডারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ডা: মেঘনাদ সাহা ।
![]() |
| ডা: মেঘনাদ সাহা |
আচ্ছা এতক্ষণ নিশ্চই লক্ষ্য করেছেন, বার বার বলেছি বাংলা ক্যালেন্ডার, কিন্তু ক্যালেন্ডার তো ইংরেজি শব্দ, তাহলে ক্যালেন্ডারের বাংলা কি ? ক্যালেন্ডার কে বাংলায় বলে, বর্ষপঞ্জি।
আর ধরুন কেউ হঠাৎ করে জিঞ্জেস করল, এখন বাংলার কত সাল চলছে,
খ্রিষ্টাব্দ থেকে পাঁচশ তিরানব্বই বিয়োগ করলে বাংলার কত সাল চলছে চলে আসবে । মোটামুটি ভাবে বলা যায়, খ্রিষ্টাব্দ থেকে বঙ্গাব্দ,পাঁচশ তিরানব্বই তিন মাস পিছিয়ে থাকে ।
এই ছিল মোটামুটি বাংলার বর্ষপঞ্জি বা ক্যালেন্ডারের ইতিহাস, সবাইকে জানাই আগাম নববর্ষের শুভেচ্ছা ।
ছবি সূত্র - Internet
তথ্য সূত্র - wikipedia
http://scroll.in/article/720351/bengali-new-year-how-akbar-invented-the-modern-bengali-calendar
https://bangla.bdnews24.com/lifestyle/article1135738.bdnews
Bengal
Bengali
Bengali New Year
Emperor Akbar
Heritage www.chaloamaragalpakori.com
History
History of Bengali months name
Mythology
Poila Boishakh
- Get link
- X
- Other Apps


.jpg)


Comments