- Get link
- X
- Other Apps
Posted by
Tiki liki
on
- Get link
- X
- Other Apps
![]() |
| কাদম্বিনী গাঙ্গুলী |
আন্তর্জাতিক নারী দিবস, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই দিনে সবাই , নারী দিবসের শুভেচ্ছা জানায় । বছরের মাত্র একটা দিনই নারীদের জন্য আলাদা করা । বিশ্বব্যাপী সমস্ত নারীদের শুভেচ্ছা জানানো হয় । এই বছর নারী দিবস থিম হলো, ডিজিটাল । 1975 সালে UNO প্রত্যেক বছরের মার্চ মাসের 8 তারিখ আন্তর্জাতিক নারী দিবস সেলিব্রেট করা হয় । এর আগে অবশ্য 1909 সালে আমেরিকায় 28 ফেব্রুয়ারী নারী দিবস পালন হয়েছিল।
আমেরিকার সোশ্যালিস্ট পার্টি অফ আমেরিকা, নিউইয়র্কে বস্ত্রশ্রমিকেরা নিজের সম্নানের জন্য, ধর্মঘট করেছিল । এর পর থেকেই নারী দিবস পালন শুরু হয়েছিল । তাদের উদ্দেশ্য ছিল, সমবেতন ও নির্দিষ্ট সময়ের কাজের দাবিতে শুরু হয় এই আন্দোলন। আমেরিকার পর, 1910 সালে কোপেনহেগেন এর উদ্যোগে, 19 মার্চ মাসে অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, জার্মানি এবং সুইজারল্যান্ডে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন হয় ।
একই সঙ্গে রাশিয়ায় নারীরা 28 ফেব্রুয়ারি তে রুটি ও শান্তির দাবিতে, নারী দিবস পালন হয়েছিল, একই সাথে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে বিরোধিতাও করেছিল । ইউরোপে 8 মার্চ নারী এক বিশাল শান্তি মিছিল করেছিল । আনুষ্ঠানিক ভাবে 8 মার্চ 1975 সালে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় , 1977 সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সদস্য রাষ্ট্র নারীদের অধিকার ও বিশ্ব শান্তির জন্য এই দিনটিকে সিকৃতি দেওয়া হয়।
আমাদের ভারতবর্ষে সেই প্রাচীন সময় থেকে নারীদেরকে সম্মান জানানো হয় এমনকি পুরান, বেদ, উপনিষদেও গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করেছে নারীরা । মোগল আমলেও বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য নারীতে উল্লেখ পায় যেমন নুরজাহান তার আগে রাজিয়া সুলতানা উল্লেখযোগ্য সম্রাট কে ছিলেন । ব্রিটিশ ভারতীয় ব্রিটিশদের অন্যতম বিরোধী ছিলেন ঝাঁসির রানী লক্ষ্মীবাঈ তিনি মহাবিদ্রোহে রীতিমতো ব্রিটিশদের সামনে লড়াই করেছিলেন। এছাড়া বহু বিপ্লবী আছে যেমন মাতঙ্গিনী হাজরা, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার প্রমুখ ।
এতো গেলেও ভূমিকা নারী দিবস উপলক্ষে আজকে যার কথা বলবো তিনি হলেন ভারতের প্রথম মহিলা গ্রাজুয়েট, এবং প্রথম মহিলা ডাক্তার !
অনেকে হয়তো বুঝেই গেছে কার কথা, বলছি তিনি হলেন ডাক্তার কাদম্বিনী গাঙ্গুলী । কাদম্বিনী দেবীর জন্ম হয় জুলাই মাসের 18 তারিখে ভাগলপুরে 1861 সালে । অবশ্য তাদের গ্রামের বাড়ি ছিল বরিশালের চাঁদসি গ্রামে । কিন্তু কাদম্বিনী দেবীর বাবা চাকুরি জন্য থাকতেন বিহারের ভাগলপুরে, তিনি ছিলেন ভাগলপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক । কাদম্বিনীর দেবী বাবা ব্রজকিশোর বাবু ভাগলপুরে নারী মুক্তি আন্দোলন শুরু করেন । তিনিই প্রথম ভারতে মহিলা সমিতি চালু করেছিলেন । তাই স্বাভাবিক ভাবেই বাবা ও পরিবারের মুক্ত পরিবেশে জন্য কাদম্বিনী দেবি ছিলেন মুক্তচেতা, ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি তার খুব আগ্রহ ছিল।
14 বছর বয়সে ব্রজকিশোর বাবু কলকাতার এক বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি করে দেন কাদম্বিনী কে । 1873 সালে কাদম্বিনী ভর্তি হয়, হিন্দু বিদ্যালয় এ, তারপর তিন বছর পর অন্য বিদ্যালয় ভর্তি হন তার নাম হলো বঙ্গ মহিলা বিদ্যালয় এরপর কাদম্বিনীর স্কুলের নাম হয় বেথুন স্কুল। এই স্কুল থেকেই এন্ট্রন্স পরীক্ষা পাশ করেন । কাদম্বিনীর এই কৃতিত্বের খবর কানে পৌঁছেছিল খোদ লর্ড লিটনের, লেডি লিটনের কাছ থেকে পুরস্কার পেয়েছিলেন কাদম্বিনী । কাদম্বিনী সাথে আরো একজন এন্ট্রন্স পরীক্ষায় পাস করেছিল তিনি হলেন, চন্দ্রমুখি বসু ।
![]() |
| বেথুন কলেজ |
বলা হয় মূলত এই দুজনের জন্যই বেথুন স্কুলের নাম হয় বেথুন কলেজ, এই ঘটনা এরআগে কখনো ঘটেনি বলে সমাজে শোরগোল পড়ে যায়। 1883 সালে চন্দ্রমুখি বসু পলিটিক্যাল ইকোনমিক আর কাদম্বিনী অংকে গ্রেডুয়েট হন ।
![]() |
| চন্দ্রমুখি বসু |
এই ঘটনার জন্য কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় কাদম্বিনী ও চন্দ্রমুখি নিয়ে আস্ত একটা কবিতা লিখে ফেলেন, শোনা যায় সেই এই দুজন কে দেখতে বেথুন কলেজের ক্যাম্পাসে ভীড় উপচে পড়ে ছিল । তবে সবাই যে উৎসাহ দিতে তা কিন্তু নয়, পুরুষতান্ত্রিক সমাজ এই জিনিসটা ভাল ভাবে নেয়নি ।
![]() |
| দ্বারকানাথ গাঙ্গুলী |
কাদম্বিনী দেবী বিলেতে গেলেন পড়তে, তখনকার সময় যঠেষ্ট কঠিন ছিল, কারণ সমাজ ছিল বড়ই রক্ষনশীল । তার সঙ্গি বলতে ছিল একজন মেমসাহেব । তিন মাসে তিনটি ডাক্তারি ডিপ্লোমা হাসিল করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি । দেশে ফিরে তিনি নিজের চেম্বার খুলেছিলেন তিনি অদ্ভুত ব্যাপার কিন্তু, একটা দুঃখ আছে এর মধ্যে, কাদম্বিনী দেবী ছোট ছেলে তাকে চিনতেই পারেনি । কাদম্বিনী দেবী এক অসাধারণ চিকিৎসক ছিলেন, একই সঙ্গে রোগীর অপারেশন করছেন আবার সেলাই করছেন তার পরেই, সেলাই ছিল তার শখের জায়গা। জানা যায় রোগীর বাড়িতে যাওয়ার সময়, সময় পেলেই একটু উলের কাঁটা বুনতেন তিনি । 1898 সালের জুন মাসের 27 তারিখ না ফেরার দেশে চলে গেলেন কাদম্বিনী দেবীর স্বামী দ্বারকানাথ গাঙ্গুলী । সাবাই অবাক, কোথায় এখন শোক করার কথা কিন্তু, ডাক্তার কাদম্বিনী দেবী, একেরপর এক অপেরাশন করছে জমিদার বাড়িতে রোগী দেখছেন এতটাই পেশাদারিত্ব ছিল কাদম্বিনী দেবীর । কিন্তু কাদম্বিনী দেবী কে কম অপমান আর ঝক্কি পোহাতে হয়নি কাদম্বিনী দেবী কে ! গবেষক বরুন চট্টোপাধ্যায় বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায় । গ্রেডুয়েট হওয়ার আগেই তিনি, সিন্ধান্ত নিয়ে ছিলেন যে মেডিকেল পড়বেন, এবং আবেদন করেছিলেন কিন্তু সেই আবেদন নাকচ করা হয় , কারণ হিসেবে বলাহয় যে আগে গ্রেডুয়েট হতে হবে । সেইটা ও হলো মানে গ্রেডুয়েট হলেন, তখন আবার অন্য সমস্যা দেখা দিল, মেডিকেল কলেজে ঢোকাও বন্ধ করে দেয়, তৎকালীন কলেজ কর্তৃপক্ষ ।
![]() |
| কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ |
কিন্তু অনেক প্রতিরোধের পর, সমাজের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে, শেষ পর্যন্ত তিনি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হলেন । তবে তার কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য সেই সময়ের বাংলার গভর্নর জেনারেল টমসনের আগ্রহ ও হস্তক্ষেপ জন্য তিনি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন, মেডিকেল কলেজ কাউন্সিল বাধ্য হন । সেই সময় ইংল্যান্ডে ও নারী শিক্ষার প্রসার ঘটেছিল । 1893 সালের আগস্ট মাসে কাদম্বিনী দেবীর শিক্ষার সংগ্রাম নিয়ে, দ্য ওম্যান্স হেরল্ড নামের একটি ইংরেজি পত্রিকাতে কলাম লেখা হয় । সেখানে লেখা হয়েছিল, কাদম্বিনী দেবী কে, ডাক্তারি পড়তে না দেওয়ার কারণ হিসেবে বলাহয়, তাকে অপমান সহ্য করতে হবে। এর প্রতি উত্তরে কাদম্বিনী বলেন যে, তিনি সবরকম অপমান সহ্য করতে রাজি আছেন । একটা রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যায়, ক্লাসে দুশজনের মধ্যে তিনি একমাত্র নারী ছিলেন । সেই সময়ের একটি পত্রিকা বঙ্গনিবাসীতে তাকে এবং তার পেশা নিয়ে তির্যক মন্তব্য করেছিল । তবে ঐ পত্রিকার সম্পাদক ছেড়ে দেননি কাদম্বিনী গাঙ্গুলী । কাদম্বিনী দেবী ও তার স্বামী দ্বারকানাথ গাঙ্গুলী, ঐ পত্রিকার সম্পাদকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান।
বিচারে সম্পাদকের ছয় মাসের জেল আর জরিমানা করা হয় । আর মানহানির ক্ষতিপূরণ হিসেবে, কাদম্বিনী দেবী কে তিন হাজার টাকা দেওয়া হয় । সেই সময় একজন নারীর এই সমাজে রিতিমত তোলপাড় ফেলে দেয় । মেডিকেল কলেজের একজন রক্ষনশীল অধ্যাপক, কাদম্বিনী দেবীর মেডিকেল পড়ার খোলাখুলি ভাবে প্রতিবাদ করে । বলা হয় সেই অধ্যাপক কাদম্বিনী দেবী কে পাশ করার নম্বর টা দেয়নি । কিন্তু একজন ব্রিটিশ অধ্যাপক বুঝতে পেরেছিলেন, যে কাদম্বিনী দেবী সাথে অন্যায় হয়েচ্ছিল।
সেই অধ্যাপকের নাম ডাকক্তার জে. এম কোস্ট । ইনি ছিলেন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ আর মেডিসিনের অধ্যাপক, তার উদ্যোগেই সিন্ডিকেটে আলোচনার মাধ্যমে, কাদম্বিনী দেবী কে 1886 সালে এল এম এসের সার্টিফিকেট দেওয়া হয় । কিন্তু দুবছর এল এম এস পড়ার পর কাদম্বিনী দেবী কে অকৃতকার্য লেখানো হয় । সেই জন্য কোটস নিজের অধিকার প্রয়োগ করে, কাদম্বিনী দেবী কে গ্রেডুয়েট অফ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজ অথবা জিবিএমসি উপাধি পান কাদম্বিনী দেবী । যার ফলে ডাক্তার হিসাবে প্রেকটিস করার অধিকার পান ।
কাদম্বিনী দেবীর 160 বছরের জন্মদিনে Google এর তরফ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়, ভারতের প্রথম মহিলা ডাক্তার কে ।
ছবি সূত্র - internet
তথ্য সূত্র - https://www.prohor.in/indias-first-woman-physician-kadambini-ganguly
Bengali
Doctor
First Female Physician
Heritage www.chaloamaragalpakori.com
History
India
International Women's Day
Kadambini Ganguly
- Get link
- X
- Other Apps




_-_Mid_19th_Century.jpg)
Comments