- Get link
- X
- Other Apps
Posted by
Tiki liki
on
- Get link
- X
- Other Apps
আজকে একটা প্রেমের গল্প বলবো, প্রেমটা প্রেম কি হয়েছিল একজন নাৎসি বাহিনীর SS Gurd একজন ইহুদি নারীর, ভালোবাসার সপ্তাহ শুরু হয়ে গেছে, সেই জন্য প্রেমের গল্প পড়তে ভালো লাগবে সেই জন্যেই, আজকে এই গল্পকে বাঁচলাম। কিন্তু প্রেমটা ঘটেছিল এমন এক সময় যা পৃথিবীর কালো সময়ের মধ্যে অন্যতম, হ্যাঁ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় । তাও আবার হিটলারের কুখ্যাত গ্যাস চেম্বারে। যেখানে শুধুই মৃত্যু, জেনোসাইড, সেখানেই এসেছিল বসন্ত। যেখানে শুধুমাত্র ইহুদী হওয়ার জন্য মানুষ কে মৃত্যু বরণ করতে হয়েছিল। যেখানে নাৎসি বাহিনীর কুখ্যাত SS Gurd রা আনন্দ পেত, সেখানেই এসেছিল বসন্ত, ফুটেছিল গোলাপ । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে, দুবছর পর মানে 1942 সাল, তার আগে থেকেই জার্মানির সমস্ত ইহুদি কে খতম করছেন হিটালার , তার কাছে জার্মান জাতি শ্রেষ্ঠ তাই চলছে জার্মানি থেকে ইহুদি নিকেষ। সেই রকমই একদিন স্লোভাকিয়া থেকে দুটো ট্রেন ছেড়েছে, গন্তব্য আউশভিৎজ ।
![]() |
| কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প |
ঐ ট্রেন টিতে রয়েছেন দু হাজার জন অবিবাহিত নারী রা , তখন নাকি বসন্ত কাল , কিন্তু দু হাজার জন অবিবাহিত নারীদের মধ্যে কারো মনে বসন্ত ছোঁয়া ফেলতে পারেনি । তাদের মন শুধু রয়েছে ভয় , শঙ্কা কারণ ওঁরা যে সবাই ইহুদি আর ঐ আউশভিৎজে রয়েছে নাৎসি বাহিনীর কুখ্যাত কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প গুলির অন্যতম । ঐ দু হাজার নারী উপর নিঃশ্বাস ফেলছে মৃত্যু! তাদের মধ্যে একজন নাম হেলেনা সিট্রোনোভা এই প্রেম কাহিনীর নায়িকা। হ্যাঁ যা বলছিলাম, হেলেনা সিট্রোনোভার উপর তো নিঃশ্বাস ফেলছে মৃত্যু, বারবার চাইছে নিজের জীবনে । যে দিন কে গ্যাস চেম্বারে পাঠানোর কথা সেদিন দুপুরের খাওয়া পর গান শোনানোর জন্য ডাক পড়লো SS Guard দের ঘরে ।
![]() |
| হেলেনা সিট্রোনোভা |
যার একটু পরেই মৃত্যু হবে তার গলার শোনার অভিজ্ঞতাই আলাদা। অন্য দিকে বলা হয়, একদিন এক নাৎসি SS Guard নাম ফ্রানৎজ উন্সের। এই গল্পের নায়ক, যাদের গ্যাস চেম্বারে পাঠানো হবে তাদের সামনে দাড়িয়ে বললেন, এখানে কেউ ভালো গান জানে ? আজকে আমার জন্মদিন , জন্মদিনের গান জানে কেউ ? । সেদিন জন্মদিন ছিল ফ্রানৎজ উন্সের । ফ্রানৎজ উন্স একজন অস্ট্রিয়ান যুবক, হিটলারের নাৎসি বাহিনীর একজন ল্যান্স কর্পোরাল । এগিয়ে এলেন হেলেনা সিট্রোনোভা, যার কিনা মৃত্যু হবে কিছুক্ষণ পরে আর যারা মৃত্যু দেকে আনবেন, তাদের একজন জন্য গাইছেন জন্মদিনের গান । সব আবেগ, দুঃখ ঝরে পড়েছিল হেলেনা সিট্রোনোভার গলায়, কেঁদে ও ফেলেছিলেন হেলেনা । অবাক হয়ে দেখছিলেন ফ্রানৎজ উন্স , আগে ও দেখেছেন এই ইহুদি বন্দি কে , কিন্তু আজকে একটু ভালো করে দেখলেন। আসলে ফ্রানৎজ উন্স ভালোবেসে ফেলেছিলেন হেলেনা সিট্রোনোভা কে ।
![]() |
| SS Guard এর চিহ্ন |
আর সেই জন্য সেদিন আর ঐ গ্যাস চেম্বারে যেতে হয়নি হেলেনা সিট্রোনোভা কে , কিছু বন্দোবস্ত করে আটকে দিয়েছিল ফ্রানৎজ । ফ্রানৎজ খুব ভালো ভাবেই জানতেন হেলেনা কে বাঁচানোর শাস্তি, হোক শাস্তি কুছ পরোয়া না, তিনি বাঁচাবেন হেলেনা সিট্রোনোভা কে । ফ্রানৎজ যে পাগলের মত ভালোবেসে ফেলেছে কে। পরেরদিন সকালে একটা ছোট্ট কগাজ পেলেন হেলেনা, সেখানে লেখা ছিল "আমি তোমাকে ভালবাসি" রাগে ঘৃণায় ছিঁড়ে ফেললেনকাগজ টা।
একজন SS Guard এর ভালবাসা, যারা কি না বিনা কারণে মানুষ দের মেরে ফেলছে, তাদের ভালবাসা। কিন্তু কোথায় যেন ভালবাসা শব্দটা একটু কাঁপিয়ে দিল হেলেনা কে , যদি এই মৃত্যু ক্যাম্পে কিছু দিনের জন্য যদি নিজের জীবন কে বাঁচানো যায়! শেষ হেলেনা সিট্রোনোভা ভালবেসে ফেলেছিলেন ফ্রানৎজ উন্স কে। প্রথম দিকে তো ফ্রানৎজ মুখের দিকে তাকাতেই পারতেন না হেলেনা। কোনো SS Guard এর সঙ্গে ইহুদি নারীর ভালবাসা নিষিদ্ধ এখানে, আর সেখানেই কিনা বসন্ত এসেছিল ! একটা খবর পেল হেলেনা , তার বোন সহ দুই সন্তানকে আনা হচ্ছে পোল্যান্ডের এই আউশভিৎজ ক্যাম্পে ।
![]() |
| ফ্রানৎজ উন্স |
সহজেই বুঝে গেলন হেলেনা, তার বোনে সহ দুই সন্তানকে পাঠানো হবে গ্যাস চেম্বারে, হেলেনা সাহায্য চাইলেন SS Guard ফ্রানৎজ এর কাছে , তবে দুই সন্তানকে বাঁচাতে পারবে কিনা সেই কথা দিতে পারল না ফ্রানৎজ, কারণ সে তো জানে আউশভিৎজের ক্যাম্প শিশু হত্যার জন্য কুখ্যাত, চার হাজার জন শিশু যারা ফ্রাস থেকে এসেছিল তাদের হত্যা করা হয়েছিলো। এই আউশভিৎজ কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প নাৎসি প্রধান ছিল লিথুনিয়ান, এর কাজ ছিল বিসাক্ত ফেনল ইজেকশন দিয়ে হত্যা করা । আউশভিৎজে এই ক্যাম্প টি করেছিল হিটলারের অত্যন্ত বিশ্বস্ত রুডলফ হস । 1943 সালে বিরাট সব কবর তৈরি করা হলো আউশভিৎজে, আটটি গ্যাস চেম্বার তৈরি করা হয় আর বড় বড় 46 উনুন বসানো হলো। নাৎসি বাহিনীর বরাবরই মানুষ মারা জন্য পছন্দ ছিল গ্যাস চেম্বার, কারণ বুলেটের থেকে এই ব্যাবস্থা অনেক সস্তা। যাত্রী বোঝাই ট্রেন আসতো আউশভিৎজের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প আর শিকার বেছে ঢুকিয়ে দেওয়া হতো এই ক্যাম্পে। এই কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে চলতো মানুষের উপর বিভিন্ন ধরনের পরিক্ষা, এই ক্যাম্পে মানুষ কে গিনিপিগ হিসাবে ব্যাবহার করে সে যে কোন মানুষ মানে মহিলা, পুরুষ, শিশু, যমজ শিশু দের উপর চলতো বিভিন্ন পরীক্ষা। এই ক্যাম্পে SS এর এক চিকিৎসক ছিলেন নাম জোসেফ মেনগেলেস, তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভয়ানক সব পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাতেন কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প বন্দি মানুষদের উপর । ইভা মোজেসকোর নামে এক কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প বন্দির বর্ণনায় এর উল্লেখ পাওয়া যায় । সেই ভায়াবহ বর্ণনা আর উল্লেখ করেছি না। এই সব কিছু জানতো SS Guard ফ্রানৎজ সেই জন্য হয়তো, হেলেনার বোনের বাচ্চাদের বাঁচানোর প্রতিশ্রুতি দিতে পারেনি ফ্রানৎজ । কিন্তু শেষ অবধি ঠিক গ্যাস চেম্বারে ঢোকার আগের মূহূর্তে, হেলেনার বোনে কে খুঁজে বের করে অবধারিত মৃত্যু হাত থেকে বাঁচিয়ে ছিল SS Guard ফ্রানৎজ উন্স।
তার হেলেনার বোনের বাচ্চাদের বাঁচাতে পারেনি ফ্রানৎজ । এই ভয়ঙ্কর আউশভিৎজের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প একটি ইহুদি মেয়ে কে নিরাপত্তা দিয়ে ছিল নাৎসি বাহিনীর কুখ্যাত SS Guard ফ্রানৎজ উন্স । বার বার নিজেকে বাজি রেখে নিজের জীবনের ঝুকি নিয়ে বিপন্ন করে কৌশলে হেলেনা সিট্রোনোভা বাচিয়েছে ফ্রানৎজ । নাৎসি কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প চলতো ভালবাসা এক ইহুদী মেয়ে ও SS Guard ফ্রানৎজ এর মধ্যে। নাৎসি বাহিনীর যখন হেরে গেছে, সোভিয়েত সেনার যখন নাৎসি বাহিনীর অধিকৃত যায়গা গুলির দখল নিচ্ছিল, সেই সময় গ্যাস চেম্বার গুলি উড়িয়ে দিয়ে গণহত্যার কোনো প্রমাণ লোপাট করে পালাতে লাগলো নাৎসি বাহিনীর কুখ্যাত SS Guard রা । ফ্রানৎজ ও পালিয়েছিল কিন্তু নিজের মায়ের ঠিকানা রেখে গেছিল হেলেনা জন্য, সেখানে গিয়ে অন্তত সুরক্ষিত থাকতে পারে। হেলেনা ও কাউকে বিশ্বাস করতে পারছিল না । নিজের বোন রেজিনকাকে নিয়ে, হেলেনা চলে যুদ্ধ বিধস্ত পূর্ব ইউরোপে , তার পর ইজারেল এল হেলেনা । অবশেষে ফ্রানৎজ ফিরে এল অস্ট্রিয়ায়, পাগলের মতো খুঁজতে থাকালো হেলেনা কে কিন্তু পায়নি সে, ভেবেছিল স্লোভাকিয়ার সেনারা ধরে নিয়ে গেছিল, সেখানেও নেই হেলেনা সিট্রোনোভা । শেষে আশা ছেড়েই দিয়েছিল ফ্রানৎজ । দেখা হয়েছিল কি দুজনের ? হ্যাঁ দেখা হয় হেলেনা সিট্রোনোভা ও ফ্রানৎজ উন্সের । 1972 সাল অনেক তদন্তের পর প্রাক্তন নাৎসি অফিসার হিসাবে অস্ট্রেয়ায় গ্রেফতার করা হয় ফ্রানৎজ উন্স কে , যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ট্রায়ল শুরু হয় ফ্রানৎজের । এমন সময় আদালতে হাজির হয় দুই মহিলা, ফ্রানৎজ তো দেখে অবাক, বেচে আছে হেলেনা সিট্রোনোভা। আনন্দ মন ভরে ওঠে ফ্রানৎজের । হেলেনা ও তার বোনে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ছাড়া পান ফ্রানৎজ উন্স। পরে এক সাক্ষাৎকারে ফ্রানৎজ উন্স বলেছিলেন তিনি নাকি আগে খুব নিষ্ঠুর ছিলেন, কিন্তু হেলেনার প্রেম সাহচার্য তাকে অন্য মানুষের করে তুলেছিলেন । ভাবছেন নিশ্চয়ই তাদের এই সম্পর্ক পূর্ণতা পেয়েছিল কি না ? উত্তর "না" বর্তমান কেউ এই ইহ জগতে নেই, 2005 সালে হেলেনা সিট্রোনোভা মারা যান আর ঠিক চার বছর পর মানে 2009 সালে ফ্রানৎজ উন্স পৃথিবী ত্যাগ করেন , কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কালো ইতিহাসে অমর করে দিয়েছে এই প্রেম কাহিনী। কিছু বছর আগে তো এই প্রেম কাহিনী উপর ডকুমেন্ট্রি বেরিয়ে ছিল। এই ভালবাসার গল্পে লেগে ছিল বারুদের গন্ধ।
ছবি সূত্র - internet
https://auschwitz.net/helena-citronova-y-franz-wunsch-amor-prohibido-en-auschwitz/
https://prohor.in/love-story-of-a-nazi-soldier-and-jewish-prisoner-in-concentration-camp
Air Concentration Camp
FRANZ WUNSCH
HELENA CITRÓNOVÁ
History
Love story
Nazi Prisoner
World war 2
www.chaloamaragalpakori.com
- Get link
- X
- Other Apps





Comments