বাংলার হুডিনি গণপতি চক্রবর্তী

বাংলার হুডিনি গণপতি চক্রবর্তী 

 


গণপতি চক্রবর্তী এই নামটির সঙ্গে  পরিচয় হয় শ্রী কৌশিক মজুমদার প্রণীত সূর্যতামসীর বইটির মাধ্যমে।

এক কথায় বাংলার হুডিনী বলা চলে গণপতি চক্রবর্তীকে । মহাবিদ্রোহের পরের সাল মানে 1858 তে শালকিয়াতে জন্ম হয় গণপতির । ছোটবেলা থেকে   গান বাজনার শখ ছিল গণপতির, কারণ তার বাবা মহেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী খুব ভালো পাখোয়াজ বাজাতেন, গণপতি কিন্তু জমিদার বাড়ি ছেলে ছিল, গণপতি পড়াশুনা তেমন আগ্রহ ছিল না তার ফলে বাড়িতে বকা শুনতে হতো, আরেকটু বয়স বাড়ার  পর গণপতি জাদুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে চায় তার ইচ্ছা সে হবে জাদুকর, হয়েছিলেন তাই ।  কলকাতার দর্জিপাড়ায় গণপতি খুঁজে পেয়েছিল তার প্রথম যাদুবিদ্যার গুরু, নাম ক্ষেত্রপাল বসাক । আবার জহরলাল ধরের কাছে যাদুবিদ্যার শিখেছিলেন । একবার বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছিলেন এক বন্ধু সাথে, কিন্তু পরে তার বন্ধু বাড়ি ফিরে আসলেও গণপতি বাড়ি ফেরেনি ‌। সাধু সন্ন্যাসীদের ঘুরে বেড়িয়ে, বিভিন্ন ভেলকি, জাদু , তন্ত্র শিখেছিলেন গণপতি। 35 বছর বয়সে গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস জেয়েন করে , তার আগে অবশ্য প্রিয়নাথ বসুর সঙ্গে আলাপ হয়েছে বিডন স্ট্রিটের শ্রীকৃষ্ণ লাইব্রেরীতে ।

 

প্রিয়নাথ বসু

55 বছর বয়সে গণপতি চক্রবর্তী গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস ছাড়েন । গণপতি ভারতের রত্নপ্রসবা বলে খ্যাত । গণপতি চক্রবর্তীর বিখ্যাত খেলা গুলি ছিল ভৌতিক বাক্স, জাদুর গাছ, তার অন্যতম খেলা ছিল গণপতির হাত পা বেঁধে বাক্সপুরে দেওয়া হতো কিন্তু তিনি ঠিক সময়ে বেরিয়ে আসতেন, দর্শক ভাবতেন সত্যি তার অলৌকিক ক্ষমতা ছিল। 

গণপতির ম্যাজিকের বিজ্ঞাপন 

তিনি ভেন্ট্রিলোক্যুইজমে পারদর্শী ছিলেন।(ভেন্ট্রিলোক্যুইজম হলো ঠোঁট না নাড়িয়ে কথা বলা) একটা উজ্জ্বল আলো থাকত। তারপর ধীরে ধীরে ঘন অন্ধকার হয়ে আসত। তারপর রঙ্গমঞ্চে আবির্ভূত হত নরকঙ্কাল।

 

জাদুর খেলা দেখাচ্ছেন গণপতি চক্রবর্তী 

রঙ্গমঞ্চজুড়ে হাহা-হিহি অট্টহাসি আলোড়িত হত। তারপর সেই কঙ্কালগুলি আবির্ভূত হত নারীদেহে। শূন্যে উড়ে আসত চেয়ার, টেবিল, চায়ের কাপ। তার সঙ্গে ভয়ঙ্কর মড়ার খুলি উড়ে এসে গণপতির মুখ থেকে সিগারেট নিয়ে খেত। মুঠো মুঠো ধুলো নিক্ষেপ করার পর সেখান থেকেই আবির্ভূত হত সুন্দর নারীমূর্তি। 

গণপতি ও ভৌতিক বৃক্ষ

গণপতির তিন জন শিষ্য ছিল , প্রতূল চন্দ্র সরকার মানে জাদু সম্রাট সিনিয়র পিসি সরকার, জাদুকর দুলাল চন্দ্র দত্ত বা ভিসি দত্ত, আর তৃতীয় জন   জাদুসূর্য দেবকুমার ঘোষাল । পিসি সরকার জাদু দেখে তিনি খুশি হয়েছিলেন, এবং চিঠি পাঠিয়ে ছিলেন।

গণপতি চক্রবর্তীর লেখা বই

তিনি একটি বই লিখেছিলেন যার নাম "জাদুবিদ্যা" ।  গণপতি চক্রবর্তী মৃত্যু বড় অলৌকিক ছিল , গণপতি চক্রবর্তী রাধা গোবিন্দের মূর্তীকে জড়িয়ে ধরে মৃত্যু হয় তার 1939 সালের 20 নভেম্বরে।


বৃদ্ধ বয়সে গণপতি চক্রবর্তী 

ঋণ-স্বীকার শ্রী কৌশিক মজুমদার 


বিঃ দ্রঃ - সূর্যতামসী থেকে যেই রহস্যের  সূত্রপাত হয়েছে শেষ হবে অগ্নিনিরয় তে 

ছবি সূত্র - internet

তথ্য সূত্র - https://en.m.wikipedia.org/wiki/Ganapati_Chakraborty

https://risingbengal.in/history-of-india/magician-ganapati-chakraborty-and-his-magic-words

https://www.literacyparadise.com/2020/07/Are-You-Know-About-World-Famous-Magicians-Ganapati-Chakraborty.html?m=1


Comments